স্বামী নেই সেই কবে। নেই ছেলে সন্তান। বয়স বাড়ায় চোখের দৃষ্টিশক্তি অনেকটা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোনোরকমে দুপুরের রান্না শেষ করে সবে গোসল দিতে গেলেন। এরই মাঝে এক ঝড় এসে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধা শাহানা বেগমের বসতঘর ভেঙ্গে লন্ডভন্ড করে দেয়। এখন তিনি অনাহারে -অর্ধহারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। প্রতিবন্ধী শাহানা বেগমের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের নয়াদিল গ্রামে। শুধু শাহানা বেগম নয় ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে নয়াদিল গ্রামের মুকলেস মিয়া, মধু মিয়া সহ আরো বেশ কয়েকজনের বসতভিটা।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার (১৩ জুন) বিকালে হঠাৎ ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টি শুরু হয়। পৌর শহরের তারাগন, দেবগ্রাম, উপজেলার দক্ষিণ ও মোগড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে উপজেরার নয়াদিন গ্রামসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাড়িঘরও ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ভেঙ্গে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। সেইসাথে সবজি খেতেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়।
প্রতিবন্ধী শাহানা বেগম বলেন, আমার ছেলে সন্তান নেই। একটি মাত্র ঘর ছিল। অনেক ধার দেনা করে ঘরটি করা হয়। কিন্তু ঝড়ে আমার ঘরটি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। আমার সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে। আমি কি করব কোথাই যাব বুঝতে পারছিনা। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মো: মোকলেস মিয়া জানান,গাছ ভেঙ্গে যখন ঘরের মধ্যে পড়ে তখন দুচোখে কিয়ামত দেখেছি। কিভাবে যে ঘর থেকে বের হয়েছি একমাত্র আল্লাহ জানেন।
মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আবদুল মতিন জানান, ঝড়ে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভেঙ্গে যায়। নয়াদিল গ্রামসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় অসংখ্য গাছপালাও ভঙ্গে পড়েছে। ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়ায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তিনি আরো বলেন ঝড়ের পর পরই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে তাদের খোঁজখবর নিয়েছি।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি ভোরের কাগজের এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা প্রতিবন্ধী শাহানা বেগমসহ সবক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে জেলায় রিপোর্ট দিয়েছি।