লক্ষ্মীপুরে ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ছৈয়ালকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে তিনি আদালতে হাজির হলে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শামছুল আরেফিন তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণনের নির্দেশ দেন। ইউছুফ ছৈয়াল লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। আর বাদী রূপম হাওলাদার সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক।
বাদীর আইনজীবী রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া মান্না জানান, বাদী ইউনুছ হাওলাদার রূপম অভিযুক্ত ইউছুফ ছৈয়ালের কাছে ৩২ লাখ টাকা পান। এনিয়ে কয়েক বার বৈঠকে বসলেও তিনি টাকাগুলো দেননি। সোমবার আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত ইউছুফকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এজাহার সূত্র থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে রূপম হাওলাদার চররমনী মোহন ইউনিয়নে মেঘনা নদীর মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাট ইজারার জন্য ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউছুফ ছৈয়ালকে ২৫ লাখ টাকার পে-অর্ডার দেন। এ নিয়ে রূপমের সঙ্গে অংশীদার হয়ে কাজ করবেন ও তার নামেই ঘাট ইজারা নেওয়ার অনুরোধ করেন। রূপম তাতে রাজি হন। তখন চেয়ারম্যানকে ২৫ লাখ টাকার পে-অর্ডার ও আরও ১০ লাখ টাকা দেন রূপম। পরে তারা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে ঘাটটি ইজারা পান। কিন্তু কাগজপত্রে ইউছুফ ছৈয়ালের পরিবর্তে তার ভাতিজা বাবুল ছৈয়ালের নাম দেখা যায়। কারণ জানতে চাইলে ইউছুফ তখন রূপমকে জানান, চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে নিজ নামে তিনি ইজারা নিতে পারবেন না। এর কিছুদিন পরে রূপমের অংশীদারিত্বের কথা তিনি অস্বীকার করেন। টাকা চাইলেও দেবেন না বলে জানান। এতে বাধ্য হয়ে রূপম লক্ষ্মীপুর আদালতে ইউছুফ ছৈয়ালের বিরুদ্ধে ৩২ লাখ টাকা পাওনা উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এদিকে ঘটনাটি মীমাংসার জন্য একাধিকবার ইউছুফ ও রূপম সদর মডেল থানায় লোকজন নিয়ে বৈঠকে বসেন। কয়েক বার বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান ইউছুফ ছৈয়াল রুপমকে টাকা দেবেন বলে জানান। সর্বশেষ গত ইউপি নির্বাচনের আগ মুহূর্তে আদালতে মামলাটির হাজিরা ছিল। তখন বৈঠকের মাধ্যমে তিনি ঘটনাটি মীমাংসার কথা বললে জামিন পান। কিন্তু এরপরও তিনি টাকা ফেরত দেননি। আদালতে রূপম ৩২ লাখ টাকা পাওনা বলে প্রমানিত হয়। সোমবার চেয়ারম্যান ইউছুফ ছৈয়াল আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন এবং জেল হাজতে প্রেরণ করেন।