আদালতের আদেশ অমান্য করে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে নিজ দখলীয় জমি থেকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ ও এবং নিজ দখলে থাকা পুকুরটি জোর পূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
জোরপূর্বক দখলের ঘটনাটি ঘটে হরিপুর উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের খোলড়া গ্রামের বামুনদিঘী নামক স্থানে।
মামলার এহাজার ও পুকুরের বর্তমান মালিক সুত্রে জানাযায়, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের খোলড়া মৌজার এসএ ১৩৪ নং খতিয়ানের ২০৪৩ নং দাগের সম্পতির মূল মালিক নগেন্দ্র বিহারী রায় চৌধুরী এবং গিরিজ বল্লব রায় চৌধুরী। জমিদার নগেন্দ্র বিহারী রায় চৌধুরী হুকুমনামা বলে ১৩৫৪ বাংলা সনের আষাঢ় মাসের ১৫ তারিখে এবং গিরিজ বল্লব রায় চৌধুরী ১৩৫৪ বাংলা সনের চৈত্র মাসের ১৫ তারিখে আবদুল করিম নামে এক ব্যক্তির বরাবরে পত্তন প্রদান করে দখল অর্পন করেন। ওই সম্পত্তি দখলপ্রাপ্ত হয়ে আবদুল করিম পুকুরের সংস্কার ও মাটি খনন করে মাছ চাষ করতে থাকেন এবং পুকুর পাড়ে ঘরবাড়ি নির্মান করে বসবাস করতে থাকেন। বসবাস করাকালীন ওই সম্পত্তির খাজনাদি জমিদারী সেরেস্তায় যথারীতি পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে ওই জমি ভূলবশতে আবদুল করিমের নামে এসএ রেকর্ডভূক্ত না হলে তিনি নিজ স্বত্বের ঘোষনামূলক ডিগ্রীর জন্য পূর্ব পাকিস্তান সরকারকে বিবাদী করে ঠাকুরগাঁও মুনসেফ আদালতে ১৩২/৬২ স্বত্ব নং মোকদ্দমা আনয়ন করেন। ওই মোকদ্দমাটিতে ১৯৬৫ইং সালের ২১ সেপ্টম্বর স্বত্বের ঘোষনামূলক ডিগ্রী প্রাপ্ত হন। যাহা ওই ডিগ্রী এখনোও বহাল আছে। বাংলাদেশ স্বাধীনের কিছুদিন পর ভোগদখল করা অবস্থায় আবদুল করিম মৃত্যুবরণ করেন। আবদুল করিমের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশগণ ওই সম্পত্তি ভোগদখল করে বসবাস করতে থাকেন ও পুকুর পাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা রোপন করেন এবং পুকুরে মাছ চাষ করে আসতেছে। ভোগদখল করা অবস্থায় বর্তমান জরিপে ওয়ারিশগনের নামে ২৫০৩ নং খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত হয়ে মাঠপর্চা হয়। আবদুল করিমরে ওয়ারিশগন ২০১৪ সালের জুন মাসের ১৫ তারিখে হরিপুর সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের খাজনা দিতে গেলে দায়িত্বে থাকা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বলেন ওই সম্পত্তি সরকারী সম্পত্তি তাই খাজনা নেওয়া যাবে না এবং ওই সম্পত্তি অচিরেই ইজারা প্রদান করা হবে মর্মে জানান। পরবর্তীতে আবদুল করিমের ওয়ারিশগন তাদের দখল স্বত্ব বজায় রাখা এবং ইজারা প্রদান বন্ধ করার জন্য ২০১৪ সালের ৩জুলাই ঠাকুরগাঁও সহকারী জজ আদালত (হরিপুর) এর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতে দীর্ঘদিন মামলাটি চলার পর ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট সিনিয়র সহকারী জজ (হরিপুর,ঠাকুরগাঁও) আদালতের বিচারক মোঃ আবু তালেব ওই মোকদ্দমাটি বিবাদীগণের বিরুদ্ধে দোতরফা সূত্রে বিনা খরচে বাদী মৃত আবদুল করিমের ওয়ারিশগণ এর পক্ষে ডিগ্রী প্রদান করেন এবং বিজ্ঞ আদালতের বিচারক তার রায়ে উল্লেখ করেন ওই নালিশী সম্পত্তি হতে বাদীকে অবৈধভাবে বেদখল, জমির আকৃতি পরিবর্তন ও লীজ প্রদান করা হতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করেন।
মৃত আবদুল করিমের ওয়ারিশ আবদুল হালিম বলেন আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থানীয় কিছু কূচক্রীমহল আমাদের দখলীয় সম্পত্তি থেকে বেদখল করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে আসছে। আমাদের দখলীয় সম্পত্তির উপরে একটি পুকুর রয়েছে। সেই পুকুর থেকে মাছ উত্তোলন করতে গেলে স্থানীয় কিছু কূচক্রীমহল তাদের মাছ উত্তোলন করতে দিচ্ছে না। মাছ উত্তোলন করতে গেলেই আমাদের মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করছে।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাবিবুজ্জামান বলেন বাদীর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়েছে। আদালত যে নির্দেশ দিবে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।