স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সড়কপথে যানবাহনের সংখ্যা পূর্বের তুলনায় প্রায় তিনগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত আগের সরু সড়ক দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।
এরমধ্যে বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানীর চালকদের মধ্যে চলছে একপ্রকার প্রতিযোগিতা। কে কত অল্প সময়ে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল কিংবা কুয়াকাটায় পৌঁছতে পারেন। এমন প্রতিযোগিতায় বেপরোয়াগতিতে চলাচল করতে গিয়ে ক্রমেই মহাসড়কের বরিশাল অংশে দূর্ঘটনা বেড়ে চলেছে। মাত্র দুইদিনে সরু এ মহাসড়কে পৃথক তিনটি মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন।
ফলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা থেকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েসহ চারলেন সড়কে উন্নীত করা এখন জরুরি হয়ে পরেছে। পাশাপাশি যানজট এড়াতে মহাসড়কের পাশের হাট-বাজার, সড়কের ওপর নির্মিত বাস ও পরিবহন কাউন্টার, থ্রী-হুইলারের স্ট্যান্ড নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়াসহ সড়কের পাশে মাটি ভরাটের জন্য জোর দাবী উঠেছে।
সচেতন নাগরিক কমিটির বরিশাল জেলার সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে দক্ষিণাঞ্চলের সরু সড়কপথকে চারলেনে উন্নীত করা জরুরি ছিলো। বিভিন্ন কারণে যেহেতু চারলেনের সড়ক হয়নি যা এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেমতে মহাসড়কে চলাচল করা যানবাহনের প্রতিযোগিতার কারণে বেপরোয়াগতিরোধে সরকারীভাবে বেশ কিছু কঠোর আইন বাস্তবায়ন করা উচিত। যানবাহনের বেপরোয়াগতিরোধ করা গেলেই সড়ক দূর্ঘটনা অনেকাংশে কম হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীর খাঞ্জাপুর নামক এলাকায় ২১ জুলাই দিবাগত রাতে বেপরোয়াগতির অজ্ঞাতনামা ট্রাকের চাঁপায় মোটরসাইকেল চালক এক যুবক ঘটনাস্থলেই নিহত ও এক আরোহী গুরুত্বর আহত হয়েছেন। ওইদিন (২১ জুলাই) দুপুরে মহাসড়কের উজিরপুরের নতুন শিকারপুর নামক এলাকায় মাইক্রোবাস ও পরিবহনের মুখোমুখী সংঘর্ষে ছয়জন পর্যটক নিহত ও কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এর আগেরদিন (২০ জুলাই) মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার হ্যালিপ্যাড নামক এলাকায় বিআরটিসি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ছয়জন যাত্রী নিহত ও দুইজন গুরুত্বর আহত হয়েছেন।
গৌরনদী হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, বরিশালে ঈদ-উল ফিতর ও ঈদ-উল আযহার মধ্যবর্তী দুই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে জুলাই মাসের ১৩ দিনে আটজন, জুন মাসে ১১ জন ও ১৪ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ২১ জন নিহত হয়েছেন।