মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দাম্পত্য কলহের জেরে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মৃত্যুর জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি, স্ত্রী এবং তার শালিকে দায়ী করে বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে এক যুবক।
নিহত ওই যুবকের নাম মোঃ শাহজালাল(২৮) বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামে। সে ওই গ্রামের মাহফুজ পাগলার ছেলে।
গতকাল দিবাগত রাতের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক তার দাম্পত্য কলহ নিয়ে কথা বলছেন। সংসার জীবনে তার দুটি সন্তান রয়েছে। দাম্পত্য কলহের কারণে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে তার শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। তার স্ত্রীর অনেক সমস্যা রয়েছে তারপরও সন্তানদের কথা চিন্তা করে তিনি সংসার চালিয়ে যেতে চেয়েছেন। স্ত্রী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে অনেক মানানোর চেষ্টা করেছেন তিনি কিন্তু তাদেরকে মানাতে না পারায় তিনি আত্মহনের পথ বেছে নিয়েছেন। ভিডিওতে দেখা যায় তিনি বলছেন, আত্মহত্যা মহাপাপ জেনেও আমি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম আপনার আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।
নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের ০৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ পাগলার ছেলে শাহজালালের সাথে গত প্রায় ১০ বছর আগে একই ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলমের মেয়ে পপি আক্তার(২৫)'র সাথে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। দশ বছরের সংসার জীবনে তাদের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শাহজালাল-পপি দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হতো। গত এক বছর ধরে ধরে স্ত্রী পপির চাপে বাবা মা ছেলে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। পপি পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ছিল এবং সেটি শাহজালাল হাতেনাতে ধরে ফেলেছিল। অন্য ছেলের সাথে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ্যাটিং এবং ছবি আদান-প্রদানের বিষয় নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকলে গত এক/দেড় মাস আগে পপি রাগ করে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। তবে সন্তানদের কথা চিন্তা করে পপিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল শাহজালাল কিন্তু তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের ধারাবাহিক বাজে ব্যবহারের কারণে সর্বশেষ গতকাল ( সন্ধ্যায়) তার মৃত্যুর জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি, স্ত্রী এবং শালিকে দায়ী করে একটি ফেসবুক লাইভ করেন এবং লাইভের পর পর বিষ পান করে শাহজালাল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্বজনরা তাকে প্রথমে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়, অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার শেষে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজে রাত ১১টার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রইছ উদ্দিন জানান, স্থানীয়ভাবে আত্মহত্যার একটি খবর পেয়েছি এই ঘটনা এখনো পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নাই।