একপক্ষ বলছেন হত্যা, অপরপক্ষ বলছেন আত্মহত্যা। তবে ময়নাতদন্তের রির্পোট পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এরইমধ্যে মৃত গৃহবধূর বাবা তার মেয়ে জামাতাসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার উত্তর বরাকোঠা গ্রামের।
মঙ্গলবার সকালে ওই হত্যা মামলার প্রধান আসামি ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী স্বপন বেপারীর মা ফুলবানু বেগম (৫৫) অভিযোগ করেন, মামলার পর থেকে বাড়িতে যখন পুরুষ শুন্য হয়ে পরেছে ঠিক সেইসময় মৃত রুবির ভাই রাসেল হাওলাদার, ফুফু কুলসুম বেগম ও বিউটি বেগম এবং তাদের স্বজনরা প্রকাশ্যে দুই দফায় তাদের বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে লুটপাট করেছে। এমনকি রান্না করার চুলা পর্যন্ত তারা ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। সবশেষ থানার দুই পুলিশ অফিসারের সামনে বসেও এ হামলা করা হয়েছে।
হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার বাদী মৃত রুবির বাবা একই উপজেলার হস্তিশুন্ড গ্রামের বাসিন্দা বজলুল হক হাওলাদার বলেন, আমার মেয়ে খুন হয়েছে, আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। আসামিদের রক্ষা করতে এখন আমাদের বিরুদ্ধে ঘরবাড়ি ভাংচুরের মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উজিরপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মমিন উদ্দিন বলেন, গৃহবধূ রুবি আত্মহত্যা করেছেন নাকি হত্যার শিকার হয়েছেন তা এখনই বলা যাচ্ছেনা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা। তিনি আরও বলেন, যদিও নিহতের পরিবার আদালতে অভিযোগ করায় আদালতের আদেশে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের উপস্থিতিতে মামলার আসামিদের বাড়ি ঘরে বাদীপক্ষের লোকজনের হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়ে ওসি মমিন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, উত্তর বরাকোঠা গ্রামের ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী স্বপন বেপারীর স্ত্রী দুই সন্তানের জননী রুবি আক্তারের গত ১২ জুলাই দিবাগত রাতে রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রুবির পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয় যৌতুকের দাবীতে রুবিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্বপন বেপারীর বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে প্রায়ই তার স্ত্রী রুবির সাথে ঝগড়া ও মারামারি হতো। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকও হয়েছে। তারই জেরধরে ১২ জুলাই রাতে স্বপনের মোবাইল ফোনের ম্যাসেঞ্জারে এক নারীর ছবি আসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুবির সাথে স্বপনের তুমুল ঝগড়া হয়। ধারনা করা হচ্ছে এতে অভিমান করে রুবি রাতের যেকোনো সময় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। এ ছাড়া রুবির লাশের সুরতাহাল করার সময়ও পুলিশ অফিসাররা গলায় ফাঁসের চিহ্ন পেয়েছেন।