হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া মুরাদ সড়কটি জনচলাচলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সড়কটি যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার, মেরামত ও উন্নয়নের অভাবে জনচলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, মুরাদ সড়কটি মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া গ্রামের পশ্চিমের পাহাড় থেকে শুরু হয়ে ছিপাতলী ইউনিয়নের কাজীরখীল পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ কিলোমিটার। চারিয়া নয়াহাট বাজারে এসে সড়কটি চট্টগ্রাম - নাজিরহাট - পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি মহাসড়কের যুক্ত হয়েছে। তাই স্হানীয়দের চলাচলের সুবিধা জনক মাধ্যম এই সড়ক। এই সড়ক দিয়ে চারিয়া ও মির্জাপুরে স্হাপিত প্রায় ২৬ টি ইট ভাঁটা ইট ভাটায় আগুন দেওয়ার সময় মাত্রাতিরিক্ত জ্বালানি কাঠ ট্রাকে পরিবহন করা হয়। তাছাড়া সড়কের দুই পাশে বসতি নির্মিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি দ্রুত নিস্কাষন হতে না পেরে পানি জমে সড়কটি জনচলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সংস্থার, মেরামত ও উন্নয়ন অভাবে এই সড়কটি জনচলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
জনগুরুত্বের কথা বিবেচনা করে সরকার সড়কটি বিপুল অর্থ ব্যয় করে বিগত প্রায় ১০ বছর পূর্বে সংস্কার, মেরামত ও উন্নয়ন করা হয়। কিন্তু চারিয়া ও মির্জাপুর এলাকায় স্হাপিত ইট ভাটায় ট্রাকে করে মাত্রাতিরিক্ত ইট ও জ্বালানি কাঠ পরিবহনের কারণে সড়কটি জনচলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে অনেকে বলাবলি করতে শুনা যায়। বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে গাড়ি ছাড়াও পায়ে হেটে চলাচল করা দুরুহ হয়ে পড়েছে। পূর্ব দিকে ছিপাতলী অংশ নিন্মাঞ্চল হওয়ায় বন্যার পানিতে ডুবে সড়কটি জনচলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোন অসুস্থ রোগী, গর্ভবতী মহিলা এই সড়ক দিয়ে চিকিৎসার জন্য যাওয়া কস্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এই সড়ক দিয়ে লোকজন ছাড়াও স্হানীয় কয়েকটি মাদ্রাসা, উচ্চ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করে উল্লিখিত কারণে সড়কটি চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়লে ও সড়কটি সংস্কার, মেরামত ও উন্নয়নের কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। ব্যক্তিগত ও যাত্রীবাহী গাড়ি, প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন করা ট্রাক, ভ্যান গাড়ি, অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহনে চলাচল করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
প্রতিদিন অন্তত ৪ হাজারের অধিক যানবাহন এই সড়ক দিয়ে এমএম আগা লিমিটেড ফার্ম, কাসিলা বাংলাদেশ লিমিটেড ফার্মে ইউপির ৩টি ওয়ার্ডের জনসাধারণ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। গত দশ বছর ধরে সড়কের বেহাল দশা হলেও সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। বাজার থেকে পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটিতে শতাধিক বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কের কার্পেটিং উঠে শতাধিক ছোট-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় এসব খানাখন্দে আটকে পড়ছে যানবাহন। কিছুকিছু স্থানে ইটের খোয়া দিয়ে জোড়াতালি দেয়া হলেও যান চলাচলে তা উপযোগী নয়।
এই রাস্তার অটোরিকশার চালক বাদশা মিয়া বলেন, সড়কটিতে গাড়ি চলাচল ও মানুষের যাতায়াতে অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। খানাখন্দে গাড়ি পড়ে যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, যা উপার্জন করছি তার বড় একটি অংশ গাড়ি মেরামতে ব্যয় করতে হচ্ছে আমাদের। গত ১০ বছর ধরে সড়কের এই দুরবস্থা।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আকতার হোসেন খান সুমন বলেন, সড়কটিতে শুধু যানবাহন নয় মানুষের হাঁটারও অনুপযোগী! পুরো সড়কের বিভিন্ন স্থান ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কয়েক বার দাবি জানিয়েছেন। রাস্তাটিতে স্থানীয় এমপির সুদৃষ্টি কামনা করছি।
হাটহাজারী উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে বলেন, চারিয়া বাজার হয়ে পশ্চিম ও পূর্বে মুরাদ সড়ক নিয়ে এমপি মহোদয়ের সঙ্গে কয়েক বার কথা হয়েছে। আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রাস্তাটির টেন্ডার হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।