বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। ধনী দেশ গুলোর শিল্পণ্ডকারখানা কার্বন নিঃস্বনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোটাবিশ্ব। গরীব ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্র গুলো গ্রিন হাউজ ইফেক্টের ফলে প্রকৃতি যে প্রতিশোধ নিচ্ছে তাতে মানব জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতির মাঝে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের এক যৌথ গবেষণায় ভয়াবহ এক বার্তা উঠে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে দাবা-দহের ঘটনা বাড়ছেই। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বিশে^ কিছু অঞ্চলে দাবা-দহের তীব্রতা এত বাড়বে যে ওই সব অঞ্চলের মানুষদের পক্ষে আর ওই অঞ্চল গুলোয় বসবাস করা সম্ভব হবে না।
আগামী নভেম্বর মাসে মিসরে জাতিসংঘের কপণ্ড২৭ জলবায়ু সম্মেলন শুরু হবার কথা সে সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এ প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাবা দহের কারণে বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে। আগামী দিন গুলোয় প্রাকৃতিক এসব বিপর্যয় আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আঘাত হানতে পারে ঘন ঘন এবং তীব্রতর হবে। ভবিৎষতে দাবা দহ সম্পর্কিত মানবিক জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ারই পূর্বাভাস দিচ্ছে এসব বিপর্যয়।
মানুষ কতটা তাপ মাত্রা সহ্য করতে পারে, তার একটি মানবিক ও সামাজিক সীমা আছে। আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল, হর্ন অব আফ্রিকার দেশগুলো, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় দাবাহ এতটা বাড়বে যে মানুষের পক্ষে তা সহ্য করা কঠিন হয়ে যাবে। তাতে মানুষের বড় ধরনের ভোগান্তি ও প্রাণহানি ঘটবে। এমন ভয়াবহ আশংকার মাঝে বিশ্ববাসী আগামী দিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছরই জলবায়ু সম্মেলন হচ্ছে, কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়। এজন্য জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি তহবিল ও গঠন করা হয়েছে। কিন্তু শিল্পোন্নত দেশগুলোর গড়িমসির কারণে সে তহবিল ছাড় করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
জাতিসংঘ ও রেডক্রসের যৌথ প্রতিবেদনের তথ্য উপাত্ত বলছে, গোটা বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অন্ধকার ভবিৎষতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কাজেই এখনই সচেতন না হলে, এ বিশ্ব মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। বিশ্ববাসীর জীবনের সুরক্ষার জন্য যদি বিশ্ব নেতারা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হন, তবে তার দায় তাদের বহন করতে হবে। আসন্ন জাতিসংঘের কপণ্ড২৭ জলবায়ু সম্মেলনে তাই বিশ্বকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এখন প্রকৃতি মাঝে মাঝে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। কিন্তু তা যদি ধারাবাহিক হয়, তবে তার রূপ কতটা ভয়াবহ হবে, তা কল্পনা করা যায় না।