গত এক সপ্তাহ ধরে শেরপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকছে শতাধিক রোগী। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে রেখে রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এত অধিক সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই। আক্রান্ত রোগীদের পাতলা পায়খানার পাশাপাশি বমির প্রবণতা রয়েছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ওষুধ ও স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, শেরপুর জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৬টি সিট থাকলেও স্বাভাবিকভাবে ২০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে পারেন। তবে গত এক সপ্তাহ থেকে হঠাৎ করে শেরপুর পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরাও রয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে কিছু লোক সুস্থ হলেও অনেককেই আসতে হচ্ছে হাসপাতালে। এক সপ্তাহে প্রায় ছয় শতাধিক ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত বুধবার (২ নভেম্বর) শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২৮ জন রোগী। আর জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে এক সপ্তাহে অন্তত সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা নেন।
আব্দুর রহিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমার স্ত্রী তিন বার পায়খানা করার পর ডায়রিয়া শুরু হয়। তাই আমি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। ৩ দিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে। এখন কিছুটা সুস্থ। ফজিলা বেগম এক নারী বলেন, আমার এক রোগীকে ভর্তি করেছি। কিন্তু কোনো সিট নাই। ওষুধ নাই। অনেক কষ্ট হচ্ছে। সফিক মিয়া নামে এক রোগী বলেন, আমার পাতলা পায়খানা শুরু হওয়ার পর শরীর দুর্বল হয়ে যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি হই। এখানে এসে ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনি।
শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ মৌসুমী ইসলাম বলেন, ডায়রিয়ার চিকিৎসায় ২-৩ মাসে যে ওষুধ লাগতো, এখন একদিনেই তা লাগছে। তাই ওষুধ ও স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে।
শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, গত কয়েক দিনে রোগী ভর্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওষুধ ও স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা পার্শ্ববর্তী উপজেলা, জেলা ও ময়মনসিংহ থেকে ওষুধ এবং স্যালাইন নিয়ে এসে সংকট সামাল দিচ্ছি। জনগণের অসচেতনতায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জনগণকে সচেতন করতে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।