চাঁদপুর শহরের যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবীতে চাঁদপুর জেলা যুবদল,জেলা মহিলা পার্টি ও পৌর যুবলীগের তরুণ রাজনীতিবিদের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮ই জানুয়ারি বুধবার সকাল দশটায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল কুমিল্লা রিজিওনের আয়োজনে স্থানীয় রাজনৈতিক ফেলোদের এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মাল্টি পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ২২তম রাজনৈতিক ফেলো ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ নুরুল আমিন খাঁন আকাশ। সংবাদ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এইচএম আহসান উল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন, অ্যাডভোকেসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক আবু নাছের বাচ্চু পাটওয়ারী, জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি মাওলানা জাকির হোসেন হিরু, অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহ-সভাপতি ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অধ্যাপিকা মাসুদা নুর, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক শাহীন স্বপ্না।
তিনি লিখিত বক্তব্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের রাজনৈতিক ফেলো অ্যাডঃ নুরুল আমিন খাঁন আকাশ বলেন, চাঁদপুর শহরের যানজটের সমাধান নিয়ে আমাদের সবাইকে ভাবতে হবে।
এই যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবীতে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ফেলো ও তরুণ রাজনীতিবিদরা একসাথে কাজ করছেন। যানজট নিয়ে চাঁদপুরবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই। যানজটে সকালে বিকেলে কর্মজীবী, দিনমজুর, শিক্ষার্থীকে পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে।
চাঁদপুর পৌর এলাকায় প্রধান সড়কসমূহে প্রতিনিয়ত যানজটের কারণে জনদূভোর্গের শহরে পরিণত হয়েছে এবং ধীরে ধীরে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
বিশেষত শহরের বাবুরহাট মতলব রোড, কলেজ রোড, ওয়্যারলেছ মোড়, চাঁদপুর জজকোট, বাসষ্ট্যান্ড, মিশন রোড, ছায়াবানী, চিত্রলেখার মোড়, বিপনীবাগ, কলেজ গেইট, কালিবাড়ী মোড়, পালের বাজার যানজট প্রায় সময় ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
অপরিকল্পিত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অতিরিক্ত অটোরিক্সা শহরের মধ্যস্থলে বাস ও ট্রাক টার্মিনাল স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশের অভাব, অদক্ষ ড্রাইভিং, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, অপ্রসস্ত সড়ক, হকারদের ফুটপাত দখল বিভিন্ন কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক যাতায়াতজনিত জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
এতে করে শিক্ষার্থীরা সময় মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও পেশাজীবীরা কর্মস্থলে সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারছে না। মুমুর্ষ রোগী সময়মত হাসপাতালে পৌঁছতে পারছে না। অগ্নি দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস সঠিক সময়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে না পারার বিষয়গুলো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই যানজট সমস্যা সমাধানে আমরা চাঁদপুর পৌরসভার নাগরিকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে এই যৌথ অ্যাডভোকেসি উদ্যোগের অংশ হিসেবে আমরা চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে স্বাক্ষরসম্বলিত দাবিনামা হস্তান্তর করি। তিনি আমাদের চাঁদপুর শহরের যানজট নিরসনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস জানান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তারা যানজট নিরসনে বিভিন্ন প্রস্তাবনা রেখে বলেন, শহরের যানজট নিরসনে মাত্রারিক্ত অটোরিকশা দুই সিপ্টে চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিকল্প সড়ক তৈরী করা, ট্রান বাস বা মেক্সি সার্ভিস চালু করা, শহরের লেকগুলো উদ্ধার করে ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা এবং কালিবাড়ি চত্ত্বরে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি যত্রতত্র সিএনজি-অটোরিকশার অবৈধ স্ট্রান্ড উচ্ছেদ করতে হবে। সড়কগুলোর প্রসস্ত করণ কাজ চলমান রাখতে হবে। যানজট নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং দ্রুত প্রদক্ষেপ না নিলে এর থেকে উত্তোরণ আরো কঠিন হয়ে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল চাঁদপুরের তরুন রাজনৈতিক ফেলোদের পর্যবেক্ষণ মতে, চাঁদপুর শহরে ৯৫ ভাগ অটোবাইক ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সার দখলে।
অন্যান্য বক্তারা বলেন,চাঁদপুর প্রাচীন একটি শহর। নগর জীবনের আকর্ষণ, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ সুবিধার কারণে প্রতিদিনই চাঁদপুর শহরে বাড়ছে মানুষ। বিশাল জনগোষ্ঠীর যাতায়াতের প্রয়োজনে রাস্তায় ছুটে চলছে নানা ধরনের যানবাহন।সঙ্কুচিত ফুটপাত ও রাস্তার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয় শহরে। এই যানজট মুক্ত শহর গড়তে পরিকল্পিত উদ্যোগ এবং বাস্তবায়ন চাই।
প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য, রাখেন সাবেক ফেলো এবং জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল গাজী বাহার, জেলা ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক মো. শরীফ হোসেন পাটোয়ারী, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের সিনিয়র প্রতিবেদক মোঃ মিজানুর রহমান, দৈনিক চাঁদপুর প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার অভিজিৎ রায়, দৈনিক চাঁদপুর সময়ের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আশিক বিন রহিম, চাঁদপুর প্রবাহের সহ-সম্পাদক শাওন পাটোয়ারি প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার আবুল বাশার ও প্রোগ্রাম এসোসিয়েট মোঃ মাসউদুর রহমান।