রাজশাহীর চারঘাটে আদালতের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার সকালে উপজেলার ঝিকরা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্র করে উত্তেজনার একপর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে একাধিক চাকুরি প্রার্থী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ ডিসেম্বর ঝিকরা উচ্চবিদ্যালয় একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী, একজন নিরাপত্তা কর্মী ও একজন আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সোনালী ব্যাংকের পুলিশ একাডেমি শাখায় ব্যাংক ড্রাফটসহ আবেদন আহবান করা হয়। কিন্তু আবেদন করতে গেলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত হিসাব নম্বরটি সঠিক নয় বলে জানায় ব্যাংক কতৃপক্ষ। এতে অনেক চাকুরি প্রত্যাশী আবেদন করতে পারেনি। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ রশিদের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে শুধুমাত্র নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করে এবং ১০ জানুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষা দিন ধার্য করে। এমতবস্থায় শাকিল খান নামে এক চাকুরি প্রত্যাশী নিয়োগ কার্যক্রমের অনিয়ম গুলো তুলে ধরে ৯ জানুয়ারি আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আরো জানা যায়, শুক্রবার সকালে ঝিকরা উচ্চবিদ্যালয়ের ভবনে ভেতর দিয়ে তালা লাগিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। বাইরে অপেক্ষা করছিল নিয়োগ আবেদন বঞ্চিত চাকুরি প্রার্থী ও তাদের স্বজনরা। স্থানীয় বাসিন্দারা পরীক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দলে দলে বিদ্যালয়ের মাঠে জড় হতে থাকে। একপর্যায়ে চারঘাট মডেল থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মামলার বাদী শাকিল খান জানান, আমরা বিজ্ঞ আদালতের কাছে মামলার আবেদন করলে আদালত নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার উপরে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেছে। টাকার বিনিময়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতেই সকল বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরেও নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিকরা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শামসুল হক বলেন, নিষেধাজ্ঞা বিষয়টি অনেক পরে জেনেছি। তখন পরীক্ষা না নিয়ে আর কোনো উপায় ছিল না। বিদ্যালয়ের সভাপতির কথামত কাজ করেছি। তিনি যা বলবেন আমি তাই করতে বাধ্য।
এ বিষয়ে ঝিকরা উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি হাসানুজ্জামান মধু বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা যথা সময়ে গ্রহণ করা হয়েছে। আদলতের কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকলে আমি আদালতের কাছে জবাব দেবো। পরীক্ষা বন্ধ করা হবেনা।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শফিউল ইসলাম বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা ছিলনা। সেজন্য পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. নাসির উদ্দীন বলেন, ওই বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়ে শোনার পর আমি প্রধান শিক্ষককে একাধিকবার ফোন করেছি। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।