তথ্য প্রযুক্তির এই যুগেও বেতার স্বমহিমায় এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শান্তির বার্তা নিয়ে। এজন্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বস্ত গণমাধ্যম হিসেবে বেতার গণমানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক উপাঁচার্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. আবদুল খালেক। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীতে বিশ্ব বেতার দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, ১৯৬৩ সাল থেকে আমি রাজশাহী বেতারের সঙ্গে কাজ করছি। বেতারের অবদান আমাদের জাতীয় জীবনে বলে শেষ করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ যেকোনো দুর্যোগময় সময়ে বার্তা প্রেরণে বেতারের অবদান অপরিসীম। এবারের প্রতিপাদ্যে বলা হয়েছে ‘বেতার ও শান্তি’- এই শান্তি শব্দটি বার বার উচ্চারিত হওয়া দরকার। পৃথিবীতে শান্তি উঠে যাচ্ছে বললেই চলে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ চলছে। কাজে আমরা শান্তির কথাটা বার বার বলি এবং বেতারের মাধ্যমে এর বার্তা সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেই। এ সময় তিনি বেতারকে বাঁচিয়ে রাখার এবং আরও সমৃদ্ধ করার আশা প্রকাশ করেন।
ইউনেস্কো ২০১১ সালে বিশ্ব বেতার দিবস উদ্যাপনের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী নানা আয়োজনে দিবসটি উদ্যাপিত হয়ে আসছে। দিবসটিতে এবারের প্রতিপাদ্য- ‘বেতার ও শান্তি’। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় অতিথিদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী’র আঞ্চলিক কার্যালয়ে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বিশ্ব বেতার দিবস ২০২৩ এর উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধন শেষে বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঘোষক, শিল্পী, কলাকুশলী ও শুভানুধ্যায়ীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বেতার ভবন থেকে শুরু হয়ে সিএন্ডবি মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বেতার ভবনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর বেতার ভবন চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় দিবসটির ওপর আলোচনা সভা।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বেতারের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শেষে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সৌখিন যাত্রা গোষ্ঠীর সদস্যদের অংশগ্রহণে ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’ পরিবেশিত হয়।
বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালক মো. হাসান আখতার-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান বাদশা, ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মোসা. উম্মে কুলসুম। অনুষ্ঠানে বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে এদিন সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছেন তথ্যবিবরণী।