ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আর এতবড় জনবহুল এলাকার জন্য রয়েছে ১টি মাত্র ৫০ শয্যার সরকারী হাসপাতাল। তাও আবার ৩ বছর ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বেসরকারি ডায়াগনস্টিক বা ক্লিনিক থেকে বেশি টাকা খরচ করে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হচ্ছে রোগীদের। এতে ওষুধ, পরীক্ষা-নীরিক্ষাসহ চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। এই খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।এভাবে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতল তলায় যে রুমে আলট্রাসনোগ্রাফী করা হয় সেরুমে কোন আলট্রাসনোগ্রাফী মেশিন নেই।বর্তমান সেই রুমে একজন মহিলা ডাক্তারের চেম্বার রয়েছে। মেশিনটি নষ্ট হওয়ায় পড়ে আছে স্টোর রুমে। আলট্রাসনোগ্রাফী করতে আসা রোগীরা এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। মেশিন নষ্ট হওয়ায় বাইরে থেকে রোগীরা বেশী দামে পরীক্ষা করছে। আলট্রাসনোগ্রাম করতে আসা পৌর এলাকার মাঠপাড়া গ্রামের বাসিন্দা লাকী খাতুন বলেন, হাসপাতালে এসেছিলাম কম দামে আলট্রাসনোগ্রাম করতে। এসে শুনছি মেশিন ৩ বছর ধরে নষ্ট। এখন বাইরে থেকে আলট্রাসনোগ্রাম করতে হবে। বাইরে তো দাম বেশী এখন কি করি ভেবে পাঁচ্ছি না।
উপজেলার হরিহরা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ফিরোজ বলেন,সরকারী খরচে আলট্রাসনোগ্রাম করবো বলে হাসপাতালে এসেছিলাম। হাসপাতালের মেশিন নষ্ট হওয়ায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।বাইরে থেকে আলট্রাসনো করার মত কাছে টাকা নেই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। মাদারবোড সমস্যায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে মেশিনটি। পরে বিভিন্ন সময় ইঞ্জিনিয়ার ডেকেও সচল করা যায়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। সে হিসাবে বছরে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা নেন এখানে। এর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫ জনকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে দেন চিকিৎসকেরা। ৩বছর ধরে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন বিকল। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে গুরুত্বপূর্ণ এ পরীক্ষা করাতে পারছে না রোগীরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রাসনো করতে সরকারি ফি ২০০ টাকা। একই পরীক্ষা বাইরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে খরচ হয় ৫০০-৭০০।
গত ২ বছরে আনুমানিক ২০ থেকে ২২ হাজারের বেশি রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আলট্রাসনোগ্রাফী পরীক্ষা পারেনি। যার ফলে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সেইসাথে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসব পরীক্ষা করাতে রোগীদের খরচ হচ্ছে এর দুই-তিন গুণ টাকা।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সুজায়েত হোসেন বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন মাদার বোড জনিত সমস্যার কারণে অকেজো হয়ে আছে। সি এম এইচ ডি বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি ,এখনো কোন মেশিন পাইনি।
সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা দেবনাথ বলেন, আলট্রাসনো মেশিনের ব্যাপারে চাহিদা চেয়ে আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স¦াস্থ্য মন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছি এখনো কোন উত্তর মেলেনি। আমার জেলাতে সব উপজেলায় এ মেশিন নষ্ট হয়ে আছে দেখা যাক কবে নাগাদ নতুন মেশিন আসে।