বাংলাদেশে বর্তমানে বেশ অনেকগুলো ই-কমার্স সাইড রয়েছে। অনেক তরুণ উদ্যোক্তাও ঝুঁকছেন এ পেশায়। গত কয়েক বছর ঘরে বসে অনলাইনে পণ্য কেনাকাটা বা ই-কমার্স ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর গোটা খাতটি এখন ভুগছে আস্থার সংকটে। তবে ক্রেতাদের কিছুটা আস্থা ফিরতে শুরু করেছে এই অনলাইন কেনা-কাঁটার উপর। ইভ্যালি স্ক্যামের পরে ই-কমার্স খাত এখনও শক্তভাবে দাঁড়াতে পারেনি। ই-কমার্সের অবস্থা ভালো না হওয়ার পিছনে কিছু কারণ রয়েছে। সে কারণগুলো হলো মানুষের চাহিদা কমছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ একেবারে প্রয়োজনীয় জিনিস ছড়া কিছু কিনছে না। ই-কমার্স খাতে ডলার সংকট, পণ্য আমদানিতে বাধা (ঋণপত্র খুলতে না পারা), বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া, পণ্যের সংকট থাকা ই-কমার্স খাতে প্রভাব ফেলেছে। শুরুতে কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে 'অস্বাভাবিক' সব অফার দেয়। পরে দেখা যায় যে অগ্রিম অর্থ নিলেও প্রতিশ্রুতি মোতাবেক তারা সময়মত পণ্য সরবরাহ করছে না। ই-কমার্সে ভোক্তার আস্থা সবচেয়ে বড় শর্ত। কিন্তু এমন অঘটন ঘটলে মানুষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা হারাবে যা এই শিল্পকে ক্ষতির মুখে ফেলবে। একটি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্রেতা বাড়াতে নানা ধরণের ডিসকাউন্ট অফার দিতে পারেন, কিন্তু এটা ব্যবসায়ী কৌশল নাকি প্রতারণা সেটা মনিটর করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের। বাংলাদেশে প্রায় এক যুগ ধরে অনলাইনে ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। কিন্তু গত দুই বছর ধরে ই-কমার্স খাতে নানা ধরণের অনিয়মের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ কমে গেছে। তারা প্রমোশন, বিপণন কমিয়ে দিয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি) প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ কম করছে। পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলো ভিসি ইনভেস্টমেন্ট পাঁচ্ছে না। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। অনলাইন মার্কেটটা একটা পরিচ্ছন্ন গ্রোথের দিকে নিয়ে যেতে হবে ও পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোটা গুরুত্বপূর্ণ। ‘গ্রে মার্কেটে পণ্য সরবরাহ পর্যাপ্ত, দামও কম। তাই অনেক গ্রাহক অনলাইন মার্কেটের চেয়ে অফলাইন মার্কেটে বেশি নজর দেয়। ডলার রেটের সঙ্গে সঙ্গে অনলাইন ব্যবসায়ীদের ফেসবুক মিডিয়া বায়িং অনেক বেড়ে গেছে, যা প্রায় ২৫ শতাংশের মতো। বেড়েছে কর্মীদের খরচ, বেড়েছে পরিবহন খরচও। সেদিক দিয়ে চিন্তা করলে অনলাইন ব্যবসা কবে থেকে যে মুনাফায় আসবে সেটাই এখন চিন্তার বিষয়। তাই এই খাতে সরকারকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এই খাত। সকল সংকট কাটিয়ে উন্নত হোক এ খাত এটাই আশা থাকবে।