হজের খরচ বৃদ্ধি করার কারণে অনেকেই যেতে পারবে না এবার হজে। সেইসাথে যারা অনেক দিন যাবত চিন্তা ভাবনায় ছিল নির্দিষ্ট একটি খরচের মধ্যে হজ করার তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিবে। ২০২৩ সালে সরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য একটি প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। গত বছরে দুটি প্যাকেজ নির্ধারিত থাকলেও এবারে ঘোষিত একটি প্যাকেজের মাধ্যমেই হজ্জ পালন করতে হবে হজ যাত্রীদের। সরকারি ভাবে হজের প্যাকেজ মূল্য চলতি বছর আরও ১০ হাজার টাকা বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে, গত বছরের তুলনায় হজ পালনের খরচ ২৯ শতাংশ বা প্রায় দেড় লাখ টাকা বেড়েছে। এ বছর বেসরকারিভাবে জনপ্রতি হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে কমপক্ষে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৭ টাকা। অর্থাৎ এটাই সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য, তবে এটা আগের খরচের প্রায় দ্বিগুণ। আগের বছরে সৌদি ১ রিয়েল সমান বাংলাদেশে ২১ টাকা ছিল তবে এখন তা দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকায় তাই আগের তুলনায় হজের খরচ বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সেই সাথে বিমান ভাড়া ও বৃদ্ধি হওয়ার কারণে এই প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সরকারিভাবে গত বছর হজযাত্রার দুটি প্যাকেজ ছিল। এর একটিতে ব্যয় ছিল (কোরবানি ছাড়া) ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা ও অপরটির ব্যয় ছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৪৯ টাকা। চলতি বছর হজের জন্য সরকারিভাবে একটি প্যাকেজই রাখা হয়েছে এবং এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় সরকারিভাবে হজযাত্রার খরচ বেড়েছে নূন্যতম ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৭৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ২০ হাজার ৮৬৫ টাকা পর্যন্ত। কিছু দিন আগে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় হজ চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালনে যেতে পারবেন। তাঁদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ ব্যক্তি হজে যেতে পারবে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের হজ প্যাকেজে মোটাদাগে ব্যয় কমেছে দুই খাতে। সৌদি আরবে অবস্থানকালে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে পরিবহন ব্যয় বাবদ গত বছর নেওয়া হয়েছিল ৪২ হাজার ৬৩৫ টাকা করে। এবার তা কমে হয়েছে ৩৫ হাজার ১৬২ টাকা। এ ছাড়া প্রতিজন হাজির স্বাস্থ্য-বিমা বাবদ সৌদি সরকারকে আগে দিতে হতো ২ হাজার ৬৭৩ টাকা। এ বছর তা কমে হয়েছে ৯৪৭ টাকা। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে হজ প্যাকেজের ব্যয় বৃদ্ধি হজ যাত্রীদের জন্য একটি চাপের বিষয়। তাই হজ যাত্রীদের সরকারিভাবে বা বেসরকারি কোনো মোয়াল্লেম-এর সাথে যাতে খরচ না বাড়তে পাড়ে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে।