বগুড়া সারিয়াকান্দিতে পুলিশের নিকট থেকে চিহ্নিত এক মাদক ব্যবসায়িকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মাদক ব্যবসায়ীর নাম সেবিন ইসলাম (৩২) সে ফুলবাড়ী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর বাজারের মোজ্জাফর রহমানের ছেলে। গত শনিবার বিকেলে ঘটনার পর পরই প্রতিবাদে স্থানীয় জনতা, উল্লাস, বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার দুপুরে মাদক সেবনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নারচী ফকির পাড়া গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে আপেল মাহমুদ (৩০) ও মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে ওয়াসিম মিয়া (৩৮) কে গ্রেপ্তার করে সারিয়াকান্দি থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেন, রামচন্দ্রপুর বাজারে বিসমিল্লাহ ফার্মেসির মালিক সেবিন রহমানের নিকট থেকে নেশাজাতীয় লোপেন্ডা ট্যবলেট ক্রয় করেছেন এবং তারা ওখান থেকে নিয়মিত ভাবে মাদক টেবলেট কিনে থাকেন। এরপর পুলিশ সেবিনের দোকানের নিকট বাড়ী তল্লাসি এবং সেবিনকে আটক করেন। কিন্তু সেবিন আটক এড়াতে টিটেনাস ইনজেকশন খেয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেয় পুলিশকে। পরে সুকৌশলে হুমকি এড়িয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশের গাড়িতে তোলেন। এ অভিযানে নেত্বেতে ছিলেন সারিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজেস কুমার চক্রবর্তী। গাড়ীতে থানায় নিয়ে আসার সময় সেবিনের আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয় কিছু জনতা সেবিনকে ছিনিয়ে নেয়। পরে পুলিশ চলে গেলে সেবিনের আত্মীয়স্বজন এবং কিছু জনতা রামচন্দ্রপুর বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। বিক্ষোভকারীরা মাদক ব্যবসায়ী সেবিন নির্দোষ দাবী করে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
এই ঘটনায় সেবীন মিয়ার বড় ভাই আজাদ মিয়া বলেন, তার ভাই সেবিন আর মাদকের ব্যাবসা করেন না। আর যাহাদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সেবীন কে গ্রেপ্তার করতে আসেন, ওই দুইজন কেও তারা চিনেন না। এ ব্যাপারে সারিয়াকান্দি থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক নূরে আলম বলেন, ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা মহিলা সহ ২৭ জনের নামে মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা অব্যহত আছে।
এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ রাজেশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, সেবিন এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, পুলিশ সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানের সময় কিছু পাওয়া না গেলেও গ্রেপ্তারকৃত দুই মাদক কারবারি জানিয়েছেন, ওই ফার্মেসীর মালিকের কাছে থেকে তারা মাদক ক্রয় করেছেন। এর আগেও দুইবার মাদক বিক্রির অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছিল সেবীন মিয়া। সে খুব সতর্কতার সাথে অতি কৌশলে ওই এলাকায় পুনরায় মাদক বিক্রি শুরু করে। তার দোকানে থাকা সিসি ক্যামেরা এ কারনেই বন্ধ করেছে সে। অভিযানের সময় স্থানীয়দের উস্কে দিয়ে পুলিশের পেশাগত কাজে সে বাধা প্রদান করেছেন এবং পুলিশকে লাঞ্চিত করেছে। মাদকসেবির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেবীন কে গ্রেপ্তার করতে পারে পুলিশ। সাধারণ মানুষ কে ভুল বুঝিয়ে সেইটার সুযোগ নিয়েছে সে। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।