বরগুনার আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম ও সহ সভাপতি সবুজ ম্যালকারকে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্র সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আনন্দ উল্লাস করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নির্দেশ মতে জেলা ছাত্র লীগ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
জানাগেছে,আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. মাহবুবুল ইসলাম জেলা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক নির্দেশনা অমান্য করার অভিযোগে ও সহ সভাপতি কিশোর গ্যাং লিডার সবুজ ম্যালকার তরমুজ চাষিদের নিকট থেকে চাদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জরিয়ে পরায় সংগঠনের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় সোমবার জেলা ছাত্র লীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল করিম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান বলেন সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তারা আরো বলেন আর যেন কোন নেতা কর্মী দলীয় শৃঙ্খলা নস্ট করতে না পারে সেজন্যই এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। গত ২ এপ্রিল কিশোর গ্যাং লিডার আমতলী উপজেলার ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ১৪ মামলার আসামি মোঃ সবুজ ম্যালাকার ছাত্রলীগের প্রভাবখাটিয়ে হলদিয়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষীদের কাছে তরমুজ প্রতি ১০ টাকা করে চাঁদা দাবী করে। কৃষকরা চাঁদা না দিলে তরমুজের গাড়ী আটকে চাদা আদায় করেছে ছাত্রলীগ নেতা সবুজ ম্যালাকার এমন অভিযোগ তরমুজ চাষীদের। নিরুপায় হয়ে কৃষকরা তার দাবীকৃত চাঁদা দিয়ে আসছে। কিন্তু কৃষক বাসু দেব শীল তার দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় ছাত্রলীগ নেতা কিশোর গ্যাং লিডার সবুজ ম্যালাকার। সোমবার রাত নয়টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা সবুজ ম্যালাকার কৃষক বাসুদেব শীলকে হলদিয়া হাট তার অফিসে ধরে আনে। ওইখানে নিয়ে তাকে মারধর করে। কৃষক বাসুদেব শীলকে মারধরের প্রতিবাদ করে বরগুনা জেলা পরিষদ সাবেক সদস্য পৌর যুবলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আরিফ-উল -হাসান আরিফ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও সবুজ ম্যালাকার লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনার সত্যতা পায় বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অনুরোধ জানান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নির্দেশে তাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এর আগে গত ২৬ মার্চ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. মাহবুবুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। জেলা ছাত্র লীগের দেয়া নোটিশের তোয়াক্কা না করে তিনি জবাব দেয়নি। এতে জেলা ছাত্র লীগ সাংগঠনিক বিরোধী কাজ করার অভিযোগে মাহবুবুল ইসলামকে অব্যাহতি দেয়। পাশাপাশি সিনিয়র সহ-সভাপতি মতিন খানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই সাথে ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে যথাযথ সাংগঠনিক নিয়ম মেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা শাখার সম্মেলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অব্যাহতি পাওয়া আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, অব্যাহতির বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছি। তবে এখনো সাংগঠনিকভাবে কোন পত্র হাতে পাইনি।
উপজেল ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ মতিন খান বলেন, মাহবুবুল ইসলামকে অব্যাহতি দিয়ে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের সাংগঠনিক নিয়মের মধ্যে থেকে সকল কার্যক্রম সম্পাদন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। উপজেলা ছাত্রলীগকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে কাজ করবো।