ঝিনাইদহের শৈলকুপায় প্রায় ১মাস ধরে দিনের প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে জনজীবন। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নেমে গেছে ৩৫ থেকে ৪০ ফুট। ফলে পানি উঠছে না উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত নলকূপে। এ ছাড়া হাজার হাজার টিউবওযেলের পানি কম উঠছে। বিশেষ করে বোরো ধানের মাঠে সেচকাজে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করায় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না। ফলে চাপ পড়ছে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করা অগভীর নলকূপে। আর হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। চলতি শুষ্ক মৌসুমে উপজেলার বেশির ভাগ বিল-ঝিল, জলাশয় ও পুকুর-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে।
পানির শ্রমিকরা বলছেন, সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ফুট মাটির নিচে পানির লেয়ার বা স্তর পাওয়া যায়। কিন্তু এখন নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ ফুট নিচেও পানির লেয়ার মিলছে না।
সরেজমিনে শৈলকুপার মনোহরপুর, বিজুলিয়া, হিতামপুর, পৌরসভার হাবিবপুর, কবিরপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, অনেক নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও কিছু নলকূপে সামান্য পানি উঠলেও বর্তমানে একেবারেই অকেজো হয়ে গেছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ভেদে পানির স্তর ২৮ থেকে ৩০ ফুট থাকলেও বর্তমান স্তর আরও নিচে নেমে গেছে। সরকারিভাবে উপজেলায় ৫শ বেশি সাবমার্সিবল পানির পাম্প আছে। পানির সংকট কাটাতে কেউ কেউ বাড়িতে নতুন করে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আবদুর রহমান মিল্টন জানান, গত এক মাস ধরেই তাদের নলকূপে পানি অল্প উঠছে কিন্তু সম্প্রতি কোনো পানিই উঠছে না।
উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের আওদা গ্রামের সুজন সরকার জানান, তার বাড়ির একটি টিউবওয়েলে বেশ কিছুদিন ধরেই পানি কম উঠছিল। সপ্তাহ হতে চললো আর পানি উঠছে না।
শৈলকুপা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. আসিফ আলম পানি সংকটের বিষয়ে বলেন, পানির স্তর শুষ্ক মৌসুমে নিচে নামার কারণে ব্যক্তিগতভাবে স্থাপিত নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে স্পেশাল প্রকল্প নিয়ে পানি সমস্যার সমাধান করতে হবে। পানি সরবরাহ অথবা নলকূপ স্থাপনে কারিগরি সহায়তার প্রয়োজন হলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় দেবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, পানির সংকটের কথা শুনেছি। এ সমস্যার সমাধানের জন্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় সহায়তা করবে।