চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে কথিত সেই ধর্ষক রায়হান মূলত কিশোর নয়, সে ১৮ বছরের পরিপূর্ন তরুন। জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী তার বয়স ১৮ এর বেশি বলে নিশ্চিত করেছেন, হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলা
তরুনকে কিশোর সাজিয়েছে কথিত শালিশদারগনেরা। যাদের মধ্যে অন্য অন্যতম গ্রেপ্তার হওয়া ইউপি সদস্য রহমত উল্ল্যাহ্। বিষয়টি হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ নিশ্চিত করেছে। মঙ্গলবার (১৬ মে) তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। সোমবার (১৫ মে) বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে গত ২১ এপ্রিল উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের লাওকরা গ্রামের সর্দার এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষক এ বাড়ির সিরাজুল ইসলাম ওরফে ছেরু সর্দারের ছেলে। মেয়েটি একই বাড়ির বাসিন্ধা ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেনির শিক্ষার্থী।
মামলার সূত্রে জানা গেছে গত ২১ মার্চ বিকালে মাছের খাদ্য মাথায় তুলে দেওয়ার কৌশলে কিশোরীকে ঘরের ভিতরে ডেকে নিয়ে যায় মো. রায়হান। এরপর তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ছাড়া প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে একাধীকবার ধর্ষণ করলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে গত শুক্রবার (১২ মে) বিকালে ইউপি সদস্য রহমত উল্যাহ্র নেতৃত্বে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও দুই পরিবারের লোকজনকে নিয়ে শালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওই বৈঠকে ধর্ষক ও ধর্ষণের শিকার কিশোর-কিশোরীর অপ্রাপ্ত বয়স ও সর্ম্পকে চাচা-ভাতিজির কথা উল্লেখ করে কিশোরীর পরিবারকে চাপ-সৃষ্টি করা হয় এবং কিশোরীর চিকিৎসার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় রফাদফা করে দুই পক্ষের ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। ওই সময় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাইয়্যুম বেপারী, কুদ্দুস সর্দারসহ চারজন শালিসদার এবং দুপক্ষের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন বলে কিশোরীর পরিবার জানান।
ধর্ষক মো. রায়হান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে উল্লেখ করে হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলাম জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে রায়হানের বয়স ১৫ বছর দাবি করা হলেও জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী তার বয়স ১৮ বছরেরও বেশি। এ সময় তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, অন্য শালিসদারদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনায় পুলিশ গত সোমবার সব মিলিয়ে অভিযুক্ত ৫ জন আটক করেছে। তারা হলেন, রায়হানের বোন মোসা. হাজেরা বেগম (২৫) ও খালেদা আক্তার (২২), চাচাতো ভাই ও একই বাড়ির হাসান সর্দারের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান সর্দার (৩০), ইউপি সদস্য মো. রহমত উল্যাহ্ (৪৩)। আটককৃতদেরকে আদালতে পাঠানো হলে সবাই আদালত জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেয়।
আর আগে এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে উল্লেখিতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধীত ২০০৩ এর ৯ (১) এর ২০২/২১২/২১৩ ধারায় দায়েরকৃত মামলার সকল আসামীদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।