এলাকাবাসির উদ্যোগেই শেষ পর্যন্ত কেটে সরিয়ে ফেলা হয়েছে নিজামিয়ার খালের বাঁধটি। রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন সুরুর ভাই সাবেক ইউপি সদস্য শাহজালাল সানুর বাঁধা উপেক্ষা করে নিজামিয়ার খালের বাঁধটি কেটে দিয়েছে গ্রামবাসি। এতে দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পেল নিজামিয়া, চর উত্তমপুরসহ তিন গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার। শনিবার দুপুরে এলাকার জনসাধারণ মিলে বাঁধটি কেটে দেয়ায় নতুন পানি প্রবেশ করায় সাধারন মানুষের মাঝে ফিরে এসেছে স্বস্তি। প্রবাহমান খালে বাঁধ দেওয়ার তথ্য তুলে ধরে গত ৯জুন পত্রিকায় স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই টনক নরে এলাকাবাসীর। ঐক্যবদ্ধ হয়ে খাল কেটে নতুন পানির সঞ্চার হয়। মুহুর্তেই গ্রামবাসির মধ্যে খুশির আমেজ সৃষ্টি হয়।
দীর্ঘ দিন এই বাঁধের কারণে পানি চলাচল করতেনা পারায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে ওখানকার পুকুর ও ডোবার পানি থেকে রোগ জীবানুর মাধ্যমে নারী ও শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছিল। এ ঘটনায় স্থানীয় কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
স্থানীয় মো. ইদ্রিস আলী, কবির হোসেন, আবুল কালাম, চান মিয়া, কহিনুর বেগম ও বেলায়েত হোসেন জানান, মাঠ শুকনো রেখে পৌষের ধানকাটা ও রবি শস্য ফলানোর জন্য প্রতি বছর অগ্রহায়ন মাসে স্থানীয় সকলের কাছ থেকে টাকা (চাঁদা) তুলে শাহজালাল সানু। এরপর লেবার দিয়ে খালে বাঁধ দেয় এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে সে বাঁধ কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু শাহজালাল সানু এ বছর কোন বাঁধনা কেটে মাছ চাষ করবেন বলে জানান তারা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত সপ্তাহে বাধঁ কাটতে গেলে সানুসহ তার লোকজন তাদের (আমাদের) উপর চড়াওহয় এবং বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পরে। বাঁধের কারণে দীর্ঘ দিন পানি আটকে থাকায় প্রতিটি পুকুর ও ডোবার পানি পচেঁ গেছে। গোসল, রান্নার কাছে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এ পানি। এতে ডায়রিয়া, এলার্জি সহনানা চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকাবাসী। এছাড়াও আমন ধানের বীজ তৈরী নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় কৃষকরা।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য শাহজালাল সানু জানিয়েছিলেন, স্থানীয় সকলে মিলে এ বাঁধ দেয়া হয়েছে এবং সকলে মিলে এক দিনের মধ্যে কেটে দেয়া হবে। তবে তিনি এভাবে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সময় ক্ষেপন করলেও বাঁধনা কেটে টালবাহানা শুরু করেন। এমনকি এলাকাবসিকেও কাটতে দিচ্ছিলেননা।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরত জাহান খান ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) ফারজানা ববি সরেজমিনে গত ৩ জুনঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বাঁধটি কেটে ফেলতে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ভাইকে নির্দেশ দেন। তারপরেও বাঁধটি নাকাটায় এলাকাবাসীর অপেক্ষার বাঁধ ভেঙ্গে যায়। একপর্যায়ে শনিবার এলাকার কৃষকরা বাধটি কেটে দেয়। ফলে জোয়ার ভাটার পানি প্রবেশ করে। এলাকায় আবার চাষাবাদের নতুন সম্ভাবনা ফিরে এসেছে কৃষকদের মাঝে।