বিশ্ববাজারে বাড়ছে প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগীতায় বিশ্ববাজারে টিকিয়ে রাখতে হবে দেশী শিল্পকে। আর সেজন্য পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদন করতে হবে। দেশি শিল্পকে বিশ্ববাজারে সফলভাবে টিকিয়ে রাখতে পণ্যকে আকর্ষণীয় এবং গুণমানে উচ্চ স্তরে হতে হবে। উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দিক বিবেচনা করতে হবে, যেমন প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, স্কিল বাড়ানো, নতুন ডিজাইন ও নবীনতম প্রয়োগ বিবেচনা করা। দেশি শিল্পগুলির মার্কেটিং ও বিপণন উচ্চমানের হতে হবে। আকর্ষণীয় প্যাকেজিং, মার্কেটিং স্ট্রেটেজি, প্রচার ও বিজ্ঞাপনের উপযুক্ত ব্যবস্থা, গ্রাহকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা উচিত। এছাড়াও অনলাইন প্রেজেন্স বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহার করে দেশি শিল্পগুলি প্রচার করা উচিত। একটি কম্পিউটারাইজড ইনভেস্টমেন্ট সিস্টেম উপযুক্ত হতে পারে যাতে পণ্যের মূল্য, গুণমান, পরিবহণ ও বিপণনের তথ্যগুলি সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ করা যায়। এছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তির উপযুক্ত ব্যবহার করে উচ্চমানের উদ্যোগ প্রয়োগ করা যায়। বৈশ্বিক মন্দায় ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে অনেক পণ্যের অর্ডার কমে গেছে। সামনে শিল্প খাতে বড় সংকট আসতে পারে। এর মোকাবিলা উদ্যোক্তাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা একান্ত প্রয়োজন। রপ্তানি আয়ের বড় অংশ আসে তৈরি পোশাক ও এর সহযোগী খাত থেকে। তৈরি পোশাকশিল্পের ওভেন খাতের ৬০ শতাংশ ও নিট খাতের ১৫ শতাংশ কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। ব্যবহার্য রাসায়নিকের ৭০ শতাংশই আমদানি করা হয়। ব্যবহার্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, লোহার রড, স্ক্র্যাব, শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতির অধিকাংশ এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ, নির্মাণসামগ্রী, টায়ার-টিউব, প্রসাধনী, খেলনা, জুয়েলারির কাঁচামালও আমদানি করা হয়। জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ ভাঙা, টেক্সটাইল, চামড়া খাতের কাঁচামাল আমদানি হয়। আবাসন খাতের ওপর নির্ভরশীল শিল্পের শতাধিক খাত। এসব খাতের কাঁচামালও আমদানিনির্ভর। দেশি টেলিভিশন, ফ্রিজার, এসি, মোবাইল, ওষুধ ও অটোমোবাইল শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানি করা হয়। এসব কাঁচামাল আমদানিতে রাজস্ব ছাড়ের ব্যাপারে ভাবতে হবে সরকারকে। শুধু কাঁচামাল নয়, মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানিতেও সুবিধা দেওয়ার প্রয়োজন। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি পোশাক শিল্পসহ সব খাতেই অস্থিরতা চলছে। শিল্প খাতের সংকট কাটাতে সরকারের নগদ প্রণোদনা দরকার। উৎসে কর ও অগ্রিম করে ছাড় দেওয়া হলে শিল্প খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিল্প টিকিয়ে রাখতে কোনো সংস্থার সুপারিশ নয় বরং ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেখতে হবে সরকারকে।