বিশ্বের ১৭৬টি দেশে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি কর্মরত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সুশৃঙ্খল, নিরাপদ ও দায়িত্বশীল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার। বর্তমানে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে এক কোটি ৪৯ লাখের অধিক কর্মী কর্মরত। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর বিগত এক যুগে পেশাজীবী, দক্ষ, আধাদক্ষ ও স্বল্পদক্ষ ক্যাটাগরিতে ৮১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪২ জনের বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে। সরকারপ্রধান বলেন, নারীকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন ও ওরিয়েন্টেশন কার্যক্রম জেলাপর্যায়ে সম্প্রসারণ এবং বিকেন্দ্রীকরণের ফলে গত এক যুগে প্রায় ১০ লাখ নারীকর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে গবেষণা পরিচালনা করে বঙ্গোপসাগরে ৪৭৩ প্রজাতির মাছ শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১ নতুন প্রজাতির। ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশ সাগর উপকূলে এ পর্যন্ত ১৫৪ প্রজাতির সিউইড শনাক্ত করেছে, যার ২৭টি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার মাধ্যমে ছয় প্রজাতির সিউইডের চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। সিলেট-৩ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মেধাবীরা দেশেই কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। তিনি বলেন, দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের ফলে এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের কারণে মেধাবীরা দেশেই এখন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। মেধাপাঁচারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশ থেকেই মেধাপাঁচার হয়ে থাকে। তারপরও সরকারের নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও নানা কার্যকর পদক্ষেপ কারণে দেশের মেধাপাঁচার নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, সব সেক্টরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ফলে বাংলাদেশের মেধাপাঁচার অনেকটাই রোধ হচ্ছে। স্ব স্ব ক্ষেত্রে মেধাবীদের মূল্যায়নে সরকারের পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, মেধাবীদের বৃত্তি, উপবৃত্তি প্রদান, সব নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার প্রাধান্য, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষালাভের সুযোগ সৃষ্টি, রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশিষ্ট ও মেধাবীদের বিভিন্ন পদক, পুরস্কার ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মেধাবীদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করছে বর্তমান সরকার। বাংলাদেশের দ্রুত বিকশিত ও আধুনিকায়ন ভিত্তিক উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে মেধাপাঁচার রোধ গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মেধাবী, দক্ষ ও উদ্ভাবনী প্রতিভা সাধারণত কাক্সিক্ষত সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামোগত পরিবেশের অভাবে ভিনদেশে স্থানান্তর হয়। ফলে দেশের অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান, পরিবেশ, বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা, লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ ও নাগিরকত্বসহ স্থায়ী বসবাসের সুযোগ হলো মেধাপাঁচারের অন্যতম কারণ। সরকার এ বিষয়ে সচেতন এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মেধাপাঁচার রোধে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।