ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মা ও শিশু কল্যাণ কল্যান কেন্দ্রটি চিকিৎসার অভাবে এলাকার মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে গরীবদের জন্য একটি ভরসাস্থর এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। কিন্তু এখন ভরসা নেই অসহায় ও গরীবদের। সেবার পরিবর্তে মারাত্নক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শিশু ও মহিলা রোগিরা। শিশুরা বেশি আকান্ত হচ্ছে জ্বর,সর্দি,কাসিসহ নানা রোগে। আসহায় রোগিরা প্রতিদিন চলে যায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। সেখানে চিকিৎসার নামে নানা ভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। চিকিৎসক না থাকার কারণে রোগিরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ হাসপাতালে রোগিরা গেলে একজন ফ্যামেলি ওয়েল ফেয়ার ভিজিটর কোন রকম পরামর্শ দিয়ে সরকারি ওষুধ হাতে ধোরিয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিন এমন অভিযোগ রোগিদের।
কালীগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি ১০ শষ্যা বিশিষ্ট ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ঢাকঠোল পিটিয়ে। উদ্বোধনের পর থেকে প্রয়োজনীয় ডাক্তার,নার্স ও জনবল না থাকার কারণে এলাকার ভুক্তভোগিরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মর্জিনা বেগম ও নাসিমা খাতুন নামে দু,ব্যাক্তি বলেন, শারিরিক অসুস্থাতার কারণে এসেছিলাম ডাক্তার দেখাতে কিন্তু এ হাসপাতালে কোন ডাক্তার নেই এ কারণে তারা ফিরে যান। কালীগঞ্জ শহরের কোটচাদপুর সড়কের শিবনগর এলাকায় অবস্থিত ১০ শয্যা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ২ জন অভিঞ্জ ডাক্তার নিয়োজিত থাকার কথা, কিন্তু সেখানে একজন ডাক্তার ও নেই,যে কারণে আসহায়, গরীব ও ভুক্তভোগিরা চিকিৎসা নিতে পারছে না। ফলে প্রতিদিন রোগিরা সেবা নিতে আসার পর ডাক্তারের অভাবে তারা ফিরে যাচ্ছে। বর্তমানে এখানে ভিজিটর,নার্স ও অফিস সহায়ক এই তিনজন দিয়ে চলছে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি। এদের তদারকি অফিসার না থাকার কারণে তারা তাদের নিজেদের ইচ্ছামত আসা-যাওয়া করে থাকে। এ কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মরত ফ্যামেলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, ডাক্তার না থাকার কারণে আমি প্রতিদিন রোগিদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করছি ও সরকারি ওষুধ দিচ্ছি। প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৫০ জন রোগি আসে এখানে কিন্তু ডাক্তার নেই তাই সেবা ও নেই এখানে।
কালীগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি ৪ কোটি ৪২ লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ টাকা ব্যয়ে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ নির্মান করা হয়। এটির ফলে এলাকার গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য অনেক উপকারের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ এটি করেন। কল্যাণ কেন্দ্রটি বাস্তবায়ন করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপণ্ডপরিচালক ডা. জাহিদ আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর খুলনা সার্কে ৪ এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশল মীর মো. আবদুল হান্নান, কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন, পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফসহ অন্যরা।
ঝিনাইদহ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপণ্ডপরিচালক ডা. জাহিদ আহমেদ বলেছিলেন, কালীগঞ্জ পৌর শহরের শিবনগর এলাকায় কোটচাদপুর-কালীগঞ্জ সড়কের পাশে এটি তৈরি করা হয়েছে। এটিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। এই ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত থাকার কথা ২ জন মেডিকেল অফিসার, ১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব), ১ জন ফার্মাসিস্ট, ৪ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা, ১ জন অফিস সহকারী, ১ জন অফিস সহায়ক, আউটসোসিং পদ্ধতিতে ওয়ার্ড বয় এবং আয়া কর্মরত থাকার কথা। কিন্তু এসব জনবল কোন টাই নাই।
কালীগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রায় দেড় বছর উদ্বোধন হলে ও অদ্যাবধি কোন চিকিৎসক এখানে যোগদান করেনি। শুরু থেকেই চলছে এভাবে চিকিৎসক বিহিন এবং এখন পর্যন্ত রোগি ভর্তি বা আপারেশন হয়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের এ নিয়ে কার ও কোন মাথা ব্যাথা নেই, সরকারি এতবড় একটা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় জনবল ও ডাক্তারের অভাবে এলাকার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে না। কালীগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ডাক্তার ফাতিমাতুজ সাদিয়া বলেন, ডাক্তার না থাকার কারণে রোগিদের সেবা মারাত্নক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের উপরি মহলে জানানো হয়েছে ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় স্টাফ যোগদান করলে সাধারন মানুষ সকল সেবা পাবেন।