সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৪ জুলাই)। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জাতীয় পার্টি ও দলের অঙ্গ সংগঠনগুলো।
দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। এরমধ্যে রংপুরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ মাহফিল, কোরআন তেলাওয়াত, অসহায়-দুস্থদের মাঝে খাদ্যসহায়তা প্রদান ও উন্নত খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।
দলের শীর্ষ ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির।
তিনি জানান, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি থাকতে বলা হয়েছে। কর্মসূচিগুলো হলো- শুক্রবার সকাল ৬টায় জাতীয় পার্টির সেন্ট্রাল রোডস্থ জেলা কার্যালয়সহ স্বস্ব উপজেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ, কোরআন খতম, নগরীর গুরুত্ব স্থানসমূহে মাইকযোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এরশাদের জীবনী ও ভাষণ প্রচার করা হবে।
সকাল ১১টায় নগরীর দর্শনা মোড় পল্লী নিবাসে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্যদিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবর জিয়ারত, দোয়া মোনাজাত এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাদ জুম্মা স্বস্ব মসজিদ সমূহে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হবে। এতে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর মহানগর ও জেলার সভাপতি, সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এছাড়াও জেলার প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮২-১৯৯০ সাল পর্যন্ত ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিসহ গ্রাম-বাংলার উন্নয়নে কাজ করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক বিল মওকুফসহ উপজেলা ব্যবস্থার প্রবর্তকও ছিলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধান।
তার আমলেই মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। ওষুধ নীতি প্রণয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ঢাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ, যমুনা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণসহ তার যুগোপযোগী সিদ্ধান্তগুলো এখনো প্রশংসনীয় ও অমলিন।
১৯৮৬ সালে এরশাদ প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয় পার্টি। শুরু থেকেই বৃহত্তর রংপুর জাতীয় পার্টির দুর্গে পরিণত হয়। আর তাই সাবেক সেনা প্রধান হলেও মৃত্যুর পর ভক্ত-অনুসারীদের দাবির মুখে এরশাদকে রংপুরের পল্লী নিবাসে সমাহিত করা হয়।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে পরিবারের সঙ্গে রংপুরে চলে আসেন। ৯০ বছর বয়সে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।