বিপন্ন প্রজাতির দুইজোড়া কালোমুখো হনুমান বেশ কয়েকদিন ধরে দলছুট হয়ে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্যে এক জোড়া জেলার বানারীপাড়া উপজেলার সন্ধ্যা নদীর পূর্ব পাড়ের পৌর শহরসহ উপজেলার সলিয়াবাকপুর, সদর ও চাখার ইউনিয়ন এবং অপরজোড়া সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ের বাইশারী, ইলুহার, উদয়কাঠি, সৈয়দকাঠি ও বিশারকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিচরণ করছে।
সোমবার দুপুরে বানারীপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রাহাদ সুমন জানিয়েছেন, খাদ্যের সন্ধানে বনের হনুমান লোকালয়ে আসায় উৎসুক মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন হনুমান দেখতে। অনেকেই আবার আবেগতাড়িত হয়ে খাবারও দিচ্ছেন। সবশেষ সোমবার সকালে বানারীপাড়া থানা চত্বরে এক জোড়া কালোমুখো হনুমানের দেখা মিলেছে। কালোমুখো হনুমান জোড়াকে থানা কমপ্লেক্সের বাগানের ঢেঁড়স, গাছের পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফল ও সবজি খেতে দেখা গেছে।
বানারীপাড়া বন্দর বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু বলেন, ধারনা করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বানারীপাড়ায় আসা কাঁচামালের ট্রাকে উঠে কালোমুখো হনুমানগুলো দলছুট হয়ে সাতক্ষিরা, যশোর কিংবা খুলনার কোন বন এলাকা থেকে এখানে আসতে পারে।
বানারীপাড়া উপজেলা বন কর্মকর্তা তাহেরুল ইসলাম দলছুট হয়ে লোকালয়ে আসা কালোমুখো দুইজোড়া হনুমানকে কোনো ক্ষতি বা বিরক্ত না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, হনুমানগুলো লোকালয় থেকে উদ্ধার করে বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। বানারীপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উজিরপুরের প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মাওলা বলেন, কালোমুখো হনুমানগুলো যেহেতু কারও ক্ষতি করছেনা, সেহেতু এগুলো যাতে এলাকায় অবাধে বিচরণ করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, থানার ভিতরে আমাদের গড়ে তোলা ফল ও সবজি বাগানে একজোড়া বিপন্ন প্রজাতির কালোমুখো হনুমান এসে পরম আয়েসে ফল ও সবজি খাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখে সত্যি আমি দারুন খুশি হয়েছি।
বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতিমা আজরিন তন্বী বলেন, বাংলাদেশে বিপন্ন তালিকায় স্থান পাওয়া প্রাণিদের একটি কালোমুখো হনুমান। এরা দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করা বৃক্ষচারী শান্তি প্রিয় প্রাণি। বিপন্ন প্রজাতির এ কালোমুখো হনুমান রক্ষায় সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এ ব্যপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ ও বন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।