মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী ও দৌলতপুর মৌজায় ২০১৬ সালে ৩৫০ মেগাওয়াটের কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে সরকার। সে লক্ষ্যে প্রায় আড়াইশো একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। তবে পরিবেশ রক্ষার দাবিতে স্থানীয়দের আন্দোলনের মুখে সে পরিকল্পনা থেকে সরে এসে ওই জায়গায় ৬০০ মেগাওয়াটের একটি এলএনজি ভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল ও ৬০ মেগাওয়াটের একটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে চাহিদা না থাকায় ৬০০মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে তবে চালু থাকবে সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ।
সরোজমিনে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, মাটি ভরাট এবং ভূমি উন্নয়নের যাবতীয় কাজ শেষ করেছে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)। প্রকল্পটি নদীর তীরে হওয়ায় নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ফেলা হয়েছে কংক্রিট ব্লক। প্রকল্প এলাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র (সাবস্টেশন) নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাকিক ভূঁইয়া বলেন, আমরা মাঝেমধ্যে এখানে ঘুরতে আসি। মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই জায়গাটি ষোলআনী সৈকত নামে পরিচিত। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এখানে বেড়াতে আসে। অনেকদিন ধরে শুনছি এখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে তবে শুধুমাত্র একটি বিদ্যুৎ সাব স্টেশন ছাড়া এখানে কিছুই নেই।
বিষয়টি সম্পর্কে ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুজ্জামান খান জিতু বলেন, বিভিন্ন কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেরী হয়ে গেছে। তবে সাম্প্রতি শুনতে পাচ্ছি পরিবেশবান্ধব সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে এখানে। আমি দ্রুত প্রকল্পটির কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ করছি।
আরপিসিএলের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ সেলিম ভূঁইয়া জানান, আমরা সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য কনসালট্যান্ট নিয়োগের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছি। কনসালটেন্ট নিয়োগের পর আমরা ফিজিবিলিটি স্টাডি করে ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবো। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেশে বিদ্যুতের সেই রকম চাহিদা না থাকায় আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৬০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ স্থগিত থাকবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ২০২৮ সালে চালু হওয়ার কথা ছিল। তবে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি রেখে দিব যেন চাহিদা বাড়লে সেখানে কাজ শুরু করা যায়।