বর্তমানে দেশে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে অনেক আলাপ আলোচনা হচ্ছে। ডিজিটাল যে কোনো সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য দিলে তবেই সেই সেবা নিশ্চিত হয়। এ ক্ষেত্রে সুবিধা যেমন আছে, তেমনি আছে ঝুঁকিও। সম্প্রতি দেশের লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত গোপনীয় এমন বিভিন্ন তথ্য এখন আছে ইন্টারনেটের উন্মুক্ত জগতে। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে-তাহলে সুরক্ষার উপায় কী? অনেক প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তার বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে না। না করার কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে নিজেদের জানার অনিচ্ছা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করতে না পারা। সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে হলে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য করতে হবে। প্রথমেই আসা যাক নেটওয়ার্কের নিরপাত্তার বিষয়ে। নেটওয়ার্ক অনেকটা সিস্টেম এর সীমানা প্রাচীরের মত। বর্তমানে নেটওয়ার্ক স্তরে নিরাপত্তা প্রদান করার জন্য বিশ্বের বড় বড় কোম্পানি গুলো অনেক ধরনের সমাধান নিয়ে আসছে। নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্ক যুক্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রোটোকল এর নিরাপত্তার জন্য নতুন নতুন প্রোগ্রাম তৈরি করছে। এক এক সিস্টেম এর জন্য সমাধান এক এক রকম। বিভিন্ন বিষয় যেমন নেটওয়ার্কের বর্তমান চাহিদা, ভবিষ্যৎ চাহিদা, রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা, সুবিধাভোগীর সংখ্যা, কি ধরেনের সেবা প্রদান করা হবে ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সিস্টেম এর নেটওয়ার্ক সঠিক ভাবে পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত। এরপর আসা যাক সার্ভারের নিরাপত্তার বিষয়ে। সার্ভারকে তুলনা করা যেতে পারে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের সাথে। সার্ভারের ভেতর থাকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য। সার্ভারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সার্ভার হার্ডেনিং করা, এন্টি ভাইরাস চালানো, প্রতিটি ফাইল এর রিড, রাইট, এক্সিকিউশন কমান্ড কোন মনিটরিং সিস্টেম এর মাধ্যমে মনিটর করা অত্যন্ত জরুরি। সার্ভারের নিরাপত্তার পরেই অ্যাপ্লিকেশন ও ডেটাবেইসের নিরাপত্তার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। একে তুলনা করা যেতে পারে আমাদের দেশের প্রান্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে। আজকাল কম্পিউটারের বিভিন্ন ভাষায় ডেভেলপাররা বিভিন্ন ভাবে অ্যাপ্লিকেশন ডেভলপ করেন। সোর্স কোডের বিভিন্ন বাগের জন্য অ্যাপ্লিকেশন অনিরাপদ হয়ে যায়। সোর্স কোড সম্পূর্ণ ডেভলপ করা শেষে বিভিন্ন ধরনের টেস্টিং এর ধাপ পার করার পর তা ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিত। তথ্যপ্রযুক্তি সুরক্ষাসেবায় দ্রুত আইন প্রণয়ন করতে হবে। তথ্য হাতিয়ে নেওয়া ব্যক্তি এবং সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়া ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সাইবার নিরাপত্তায় অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।