বর্তমানে সারা দেশেই ডেঙ্গু রোগীর ব্যাপক সংখ্যা বাড়ছে। ঈদুল আজহার পর দেশে ডেঙ্গু রোগী ও এ রোগে মৃত্যু বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবার ভয়াবহ হতে পারে বলে বছরের শুরুতেই সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৭ হাজার ৪৬৩ জন রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৩৯৫ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৬৮ জন। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে যেখানে ৫ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাইয়ের প্রথম ২৩ দিনেই সেই সংখ্যা বেড়ে সাড়ে চারগুণ হয়েছে। আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুও বেড়েছে। গত মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হলেও চলতি মাসের তিন সপ্তাহে প্রাণ গেছে ১৩৮ জনের। হাসপাতাল চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর বাইরেও অনেক ডেঙ্গু রোগী বাড়িতে এবং ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা নিচ্ছেন, ফলে সরকারি এই হিসাবের বাইরেও আরও অনেক রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন। দুই সিটি করপোরেশনের চলছে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে বিশেষ অভিযান। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মশার লার্ভা পাওয়ায় লাখ লাখ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী জানা যায় নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশন লার্ভা ধ্বংসে জরিমানা করলেও কিছুকিছু জায়গায় মশক নিধন কর্মীদের একবারের জন্যও দেখা যায়নি। আর এসব অভিযানে এডিস মশার ডিম বা লার্ভা শনাক্ত করা হচ্ছে খালি চোখে দেখে। সে অনুযায়ী করা হচ্ছে জরিমানা। মশার শ্রেণিবিন্যাস কিংবা লার্ভা পরীক্ষার জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কোনো পরীক্ষাগার বা ল্যাব নেই। একদিকে ঢাকা উত্তর সিটি ড্রোন দিয়ে এডিস মশার লার্ভা খুঁজছে। অপরদিকে দক্ষিণ সিটি বলেছে, মশার লার্ভা পেলে তাদের খবর দিতে। ১৫ মিনিটের মধ্যে তাদের দল সেখানে পৌঁছে যাবে। প্রকৃত অর্থে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। প্রকৃতি রক্ষা না করলে আর জনগণ সচেতন না হলে সিটি করপোরেশনের পক্ষে রোগটি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।' ব্যক্তি পর্যায়ে ও প্রতিষ্ঠানে নিজ নিজ আবাসস্থল একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।