রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল বিভাগীয় শহরেই চলছে ফিটনেসবিহীন জরা-র্জীণ বাস। রাজধানীতে রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ে বহু পুরনো র্জীণ বাস। স্বল্প আয়ের মানুষকে সেই বাসেই চড়তে হয়, গন্তব্যে যেতে হয়। সারা দেশে বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে ইঞ্জিনচালিত যানবাহনরে সংখ্যা কত এবং তার মধ্যে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা কত-এর সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই কারও কাছেই। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)এর দাবি, সারা দেশে তাদের নিবন্ধিত বৈধ যানবাহনরে সংখ্যা ৫৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৬০টি। এরমধ্যে সাড়ে ৫ লাখের বেশি গাড়ি ফিটনেসবিহীন বলে জানা যায় বিভিন্ন সূত্রে। সড়কে চলাচলের জন্য যেকোনও ভেহিক্যালের যান্ত্রিক ও কাঠামোগত ফিটনেস থাকতে হয়। কাঠামোগত দিকটি চোখে দেখে দেওয়া গেলেও যান্ত্রিক দিক পুরোপুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ওপর নির্ভর করতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি দেখভাল করার মতো প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও পদ্ধতিগত সক্ষমতা এই মুহুর্তে বিআরটিএ’র নেই। এ ক্ষেত্রে সংস্থাটির আন্তরিকতার অভাবের পাশাপাশি লোকবল সংকটও রয়েছে। অর্থের বিনিময়ে ফিটনেসবিহীন গাড়িকে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ আছে। রাজধানীতে প্রায় ছয় হাজার বাস ও মিনিবাস চলাচল করে। এসব বাসের মালিক দুই হাজারের বেশি। মালিকেরা বেশি আয়ের আশায় চুক্তিতে চালকের হাতে বাস ছেড়ে দেন। বাস-মিনিবাসের মালিকদের একটি বড় অংশ রাজনৈতিক নেতা, কর্মী বা প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে তাঁদের ওপর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে ইচ্ছেমতো বাস পরিচালনা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুলত একটি দুর্ঘটনা ঘটলইে বলা হয় গাড়ির ফিটনেস ছিল না। চালকের লাইসেন্স ছিল না। কিন্তু ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে সড়ক পরিবহন আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। একটি অসাধু চক্রের কারণে আইনের এমনটি হচ্ছে। যানবাহনের কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে সড়কে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে, সেটি দুর্ঘটনা বলা যাবে কিনা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে আমলে নেওয়া উচিত। ঢাকার ২০ বছরের কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (সংশোধিত) অনুসারে, ঢাকা ও এর আশপাশের মানুষ দিনে দুই কোটির বেশিবার যাতায়াত (ট্রিপ) করেন। এর মধ্যে ৬৪ শতাংশ হয় বাসে। জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সড়কে লাইসেন্স, ডকুমেন্ট বা ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। সুতরাং সরকার ও সংশ্লিষ্টদের উচিত এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফিটনেস সমস্যা, চালকদের লাইসেন্স ও সড়কের বিভন্ন সমস্যার সমাধান করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।