লক্ষ্মীপুরে প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি ও পদায়নে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এনিয়ে শিক্ষকসহ অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষকদের হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়সহ বদলী বানিজ্য অভিযোগ। এতোদিন এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিক্ষকরা ভয়ে মুখ না খুল্লেও তাঁর এসব অভিযোগ এখন প্রকাশ্যে। বিভিন্নসূত্রে জানাগেছে,তিনি লক্ষ্মীপুরে ডিপিইও হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই বিভিন্ন স্কুল ভিজিটের নামে শিক্ষকদের নানা ভাবে হয়রানি করে নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
জানাগেছে, গত ৮ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত জেলার দুই শত একটি ( সদর উপজেলায় ১২৬টি, কমলনগর ২৮ ও রায়পুর উপজেলায় ৪৭সহ মোট ২০১টি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়। এর মধ্যে ১৪১ জনকে পদায়ন করা হয়।
তবে মঙ্গলবার রাত্র পর্যন্ত কমলনগর,রায়পুর,লক্ষ্মীপুরের পদোন্নতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা সুবিধা মতোস্থনে পদায়নের জন্য ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পর্যন্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে সুবিধা প্রদান করতে হয়েছে। অনেকটা বাধ্য হয়েই শিক্ষকরা এ টাকা দিয়েছেন বলে জানান। তবে অভিযোগকারীরা তাদের চাকুরী সংক্রান্ত কারণে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে উত্তর মজুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে অভিযোগ করেন। তার বিদ্যালয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: সাইফুল ইসলাম পরিদর্শনে যান। পরে সততা স্টোরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিকট খাতা,খলম কেন বিক্রি করা হচেছ এ প্রশ্ন তুলে শিক্ষকদের নাজেহাল করেন ডিইপিও। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পদলী করার হুমকি ধমকি প্রদান এবং নানা প্রকার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনিয়মের কথা উল্লেখ করেন। পরে তার সাথে থাকা এক শিক্ষক প্রতিনিধির মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি রফাদফা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে নোয়াখালীর জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকে লক্ষ্মীপুরের বাংঙ্গাখা ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হন সাবরিনা আক্তার নামের এক শিক্ষিকা।
বদলীর জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। একই অভিযোগ রয়েছে তিনি যোগদান করার পর থেকে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বদলী ব্যাপারেও।
এছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রানালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের কোন প্রজ্ঞাপন না থাকলেও তিনি সদর উপজলার ২৮৫টি স্কুলে (৬টি বই ২৪ শত টাকা ধরে) বই বিক্রি করে ৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা আদায় করেন। এ ব্যাপারে শিক্ষকরা ভাউচার চাইলে নাজেহাল হন তার কথা বার্তায়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম বলেন,বদলী এখন অনলাইনে হয়। সে ক্ষেত্রে তিনি বদলী বানিজ্য কীভাবে করেন উল্টো জানতে চান তিনি। এ ছাড়া শিক্ষক হয়রানি ও পদায়ন সংক্রান্ত যে অভিযোগ তা সঠিক নয়। শিক্ষক প্রতিনিধিদের গ্রুপিং তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কথা বাড়িয়ে বলছেন। বই বিক্রি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে করেছেন। সংবাদ দিয়ে কিছুই হবে না। বেশি দিন এ জেলাতে থাকছিনা।
উল্লেখ্য যে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম যোগদানের পর কিছুদিন না যেতেই নানা অভিযোগের কারণে তাকে নওগাঁও স্ট্যান্ড বদলী করার খবর পাওয়া গেছে।