কুড়িগ্রাম জেলার দু’ উপজেলায় এক যুবকের ও এক তরুণীর মরদেহসহ দু’টি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ লাশ দু’টি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো: মাহফুজুল ইসলামসহ পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাগণ দু’টি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রোববার সকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পৌর এলাকার নামা ভেলাকোপা গ্রামে কৃষি জমিতে মাথা ডুবানো অবস্থায় লিংকন হোসেন (২০) এবং উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে গলাকাটা অবস্থায় রিংকি বেগম (১৮) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উলিপুরের পান্ডুল ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এনজিও কর্মী রেজাউল ইসলামের মেয়ে রিংকি বেগম। প্রায় ৫ মাস আগে রিংকির বিয়ে হয় উপজেলার মাঝবিল এলাকায়। স্বামী চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে কর্মরত আছেন। রিংকি চার দিন আগে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। শনিবার মেয়ের বাবা-মায়ের ঝগড়া হয়। রাগ করে মেয়েটির বাবা তার কর্মস্থল লালমনিরহাটের পাটগ্রামে চলে যান। আর মেয়ের নানা বাড়িতে চলে যায় মেয়েটির মা।
রাতে সে তার দাদা-দাদী এবং ভাইসহ বাড়িতেই ছিলো। অন্যদিন তার মায়ের সাথে রাতে ঘুমালেও শনিবার রাতে তার মা না থাকায় রিংকি একাই ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ডাকাডাকি করে তার সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে রিংকির গলাকাটা লাশ দেখেন তার ভাই। এ সময় তার চিৎকারে বাড়ির অন্য সদস্যসহ প্রতিবেশিরা ছুটে আসেন।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত তামবিরুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের নামা ভেলাকোপা এলাকা থেকে মো: লিংকন হোসেন (২০) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে ওই এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত যুবক ওই এলাকার মৃত সেকেন্দার আলীর পুত্র।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে রাস্তার পাশে জমিতে লিংকনের মরদেহ অর্ধেক পানিতে আর অর্ধেক শুকনো স্থানে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় লোকজন। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে। তবে ধারণা করা হচ্ছে রাতে কোন একসময় অতিরিক্ত মাদক সেবন করার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় কাউন্সিল মো: জমশেদ আলী টুনকু জানান, নিহত লিংকন মাদক সেবন করতো। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহের পাশে মাদকের আলামত পাওয়া গেছে। তার পরিবারের অন্য কোনো অভিযোগ নেই।
সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-তদন্ত মো: আবু সাঈদ সরকার জানান, নিহতের মরদেহ অর্ধেক পানিতে আর অর্ধেক শুকনো স্থানে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে হেঁটে যেতে পানিতে পরে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।