ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পুলিশের ওপর হামলা করেছে একদল কিশোর ও যুবক। সোমবার দুপুরে উপজেলার অরুয়াইল বাজারে হাকিম মিয়া (২৮) নামের যুবকের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ হাকিম মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলছেন হামলাকারীদের অধিকাংশই কিশোর গ্যাং এর সদস্য। এদের নেতা নাঈম ওরফে ছুরি নাঈম বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, অরুয়াইল বাজারের সূতা ব্যবসায়ি কালা মিয়ার মেয়ের জামাতা হাকিম মিয়া। হাকিম একই এলাকার প্রয়াত মারুফ মিয়ার ছেলে। স্ত্রী সোমাকে (২১) মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে হাকিম। অরুয়াইলের দায়িত্বে নিয়োজিত এএস আই শামছুল আলমকে বিষয়টি অবগত করেছেন কালা মিয়া ও তার মেয়ে সোমা। বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে তারা কথা বলছিলেন। এ ঘটনায় বিচার চাইতে কালা মিয়াকে থানায় অথবা কোর্টের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন শামছুল আলম। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে যাওয়ার পথে ইউনিফর্ম পড়া পুলিশ সদস্য শামছুল আলমের উপর দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায় হাকিম ও রিফাতসহ ৫/৬ জনের একদল কিশোর ও যুবক। হাকিম লোহার রড দিয়ে পুলিশের মাথায় আঘাত করে। পুলিশ বাম হাতে প্রতিহত করলে কনুই ও আঙ্গুলে ব্যাথা পায়। শামছুল আলম বাঁচাতে এগিয়ে আসেন আরেক পুলিশ সদস্য রুকন উদ্দিন। হামলাকারীরা রুকনকেও মারধর করে আহত করেছে। আহত পুলিশ সদস্যরা সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় সরাইল থানায় মামলা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অরুয়াইল বাজারের একাধিক ব্যবসায়ি বলেন, হামলাকারীদের অধিকাংশই স্থানীয় কিশোর গ্যাং এর সদস্য। এরা দিনে রাতে ছুরা নিয়ে ঘুরে। শব্দ করলে ছুরা দেখিয়ে শেষ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে বেড়ায়। সুযোগ বুঝে মানুষকে জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নেয়। এদের পেছনে রয়েছে শক্তিশালী একাধিক গটফাদার। দেড়/ দুই বছর আগে অরুয়াইলে কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ব ও দাপটের উপর দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সরজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। বেড়েছিল পুলিশের নজরদারী। এলাকা ছেড়ে পালিয়েছিল কিশোর গ্যাং দলের সদস্যরা। স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলেছিল সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি আবারও অরুয়াইলে তাদের দাপুটে চলতে দেখা যায়।
সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আ.স.ম আতিকুর রহমান বলেন,এ ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে নামধারী ২ জন এবং অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকী আগামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।