সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং নাটোর-৪ আসন থেকে ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস মারা গেছেন। আজ বুধবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। শ্বাসকষ্টজনিত কারণে আবদুল কুদ্দুসকে গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকায় আইসিউতে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বুধবার সকালে তার মৃত হয়। পারিবারিক সূত্র জানায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিত থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
রাষ্ট্রপতির শোক: নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আবদুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বুধবার এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপ্রধান মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর শোক: নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আবদুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার দলটির উপণ্ডদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এ তথ্য জানিয়েছেন। শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবদুল কুদ্দুস ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ। সারাজীবন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি অবিচল থেকে তিনি তার সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তিনি তার সংসদীয় আসন তথা গোটা নাটোর জেলার সাধারণ মানুষের মনে গভীর ভালোবাসার স্থান করে নিয়েছেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হলো এবং প্রধানমন্ত্রী তার একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে হারালেন। প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুসের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
স্পিকারের শোক: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আবদুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। স্পিকার আবদুল কুদ্দুসের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
এমপি আবদুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এবং চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। আবদুল কুদ্দুস আওয়ামী লীগ থেকে টানা সাতবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং পঞ্চম, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সপ্তম সংসদে তিনি মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। আবদুল কুদ্দুস ৫ম জাতীয় সংসদে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, ৭ম জাতীয় সংসদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এবং ৯ম জাতীয় সংসদে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, ১০ম জাতীয় সংসদে সরকারি প্রতিশ্রুতি, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, ১১তম জাতীয় সংসদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মরহুমের জানাজা বুধবার বাদ জোহর ন্যাম ভবন জামে মসজিদে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বড়াইগ্রাম পাইলট স্কুল মাঠে, দুপুর ১২টায় গুরুদাসপুর পাইলট স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিলশা ঈদগাহ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।