বিরলে জমি দখল নিয়ে ভাবি-ননদের দ্বন্দ চরম আকার ধারণ করেছে। বিধবা ভাবির ভোগ দখলীয় জমি ননদেরা তাদের জমি বলে দাবি করে বিধবা ভাবির সাথে বিরোধ সৃষ্টি করে অবৈধভাবে দখলের পায়তারা চলছে। এ ঘটনায় বিরল থানায় বিধবা হাফেজা এর ছেলে হাইকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়েরের পর হতে আসামীদের অব্যাহত হুমকির কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে বিধবা হাফেজা খাতুন। ঘটনায় একাধিকবার স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠক হয়। কিন্তু ননদ জোসনা খাতুন ও সহরবানু এর লোকজন কোন শালিস না মেনে বিধবা ভাবির নামীয় জমি অবৈধভাবে দখলে নেওয়ার পায়তারা করে। ওই বিধবার জমি অবৈধভাবে দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনায় ননদ গংদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করায় আসামীদের অব্যাহত হুমকির কারণে বর্তমানে বিধবা হাফেজা খাতুন তাঁর এক সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। মামলার বিবরণে বিধবা হাফেজা খাতুন জানান, বিরল উপজেলার শহরগ্রাম ইউনিয়নের ওকড়া মৌজার জে এল নং- ৬২, খারিজ খতিয়ান নং- ৭৫৩/১,দাগ নং- ১০৬৫ জমির পরিমান- ৬৫ শতক ও দাগ নং- ১০৬৬ জমির পরিমান ১০ শতকসহ মোট ৭৫ শতক জমি স্বামীর নিকট হতে দলিলমূলে প্রাপ্ত হয়ে নিজ নামে খারিজ করে ভোগ দখলে আছেন। বিধবা হাফেজা খাতুন এর দুই ননদ জোসনা ও সহরবানু এলাকার মৃত মহির উদ্দীন এর ছেলে আবুল কালাম (৪৫), মৃত সফিয়ত আলী এর ছেলে আবদুর রাজ্জাক (৫৫) ও আনছার আলী (৪৭), আবদুর রাজ্জাক এর ছেলে সাইবুর রহমান (৩২), আবুল কালাম এর ছেলে জসিম উদ্দীন (২২), ফাজু মোহাম্মদ এর ছেলে মাসুদ রানা (২৭) সহ কতিপয় ব্যক্তির যোগসাজোসে বিধবা হাফেজা খাতুন এর নামীয় জমি জবর দখল করার ষড়যন্ত্র করে। এ ঘটনায় বিরল থানায় বিধবা হাফেজা খাতুন অভিযোগ দিলে বিরল থানার পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের নিয়ে শালিস বৈঠক করে। ননদগংরা শালিস না মেনে গত ২২ জুলাই-২০২৩ তারিখে দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিধবা হাফেজা খাতুন এর দখলীয় জমি জবর দখল করে বাড়ি ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ সময় বিধবা হাফেজা খাতুন তাঁর মেঝো ভাই শাহাদৎ হোসেন (৪০) ও তাঁর একমাত্র ছেলে হাইকুল ইসলাম (২৩) বাঁধা নিষেধ করতে গেলে তাদেরকে প্রহার করে। তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তাঁরা নানা ধরনের হুমকি প্রদর্শন করে পালিয়ে যায়। এতে বিধবা হাফেজা খাতুন ও তার ভাই শাহাদৎ হোসেন এবং ছেলে হাইকুল ইসলাম আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বিধবা হাফেজা খাতুন ও তাঁর ভাই শাহাদৎ হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বিধবা হাফেজা এর ছেলে হাইকুল ইসলাম বাদি হয়ে বিরল থানায় একটি মামলা নং- ১৫৩/২৩ দায়ের করে। ওই মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে আসার পর আবারও বিধবা হাফেজা ও তাঁর ছেলেকে বাড়ি থেকে তারিয়ে দিয়েছে। বিধবা হাফেজা ও তার ছেলে প্রতিপক্ষ ননদগংদের অব্যাহত হুমকির কারণে হাফেজা তাঁর বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আসামীদের অব্যাহত হুমকির কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিধবা হাফেজা খাতুন। অপরদিকে, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার আবদুল কাফি ও তাঁর স্ত্রী সালমা খাতুন ও ছেলে সালেউর রহমানকে গত ২৮ জুলাই বিকেলে উল্লিখিত আসামিরা মারপিট করে গুরুতর আহত করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী ও ছেলেকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২৩ আগস্ট এ ঘটনায় আবদুল কাফি বাদি হয়ে আঃ রশিদ, ফাজু মোহাম্মদ, আঃ রাজ্জাক, জাকিরুল ইসলাম, সাইবুর রহমান, আনছার আলী, মাসুদ রানা, কালামগনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মামলা নং- সিআর-১৭৯/২৩ (বিরল) দায়ের করেন। আদালতের বিচারক লিমেন্ট রায় অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিরল থানার অফিসার ইনচার্জকে মামলা রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। যার বিরল থানার মামলা নং-০৪, তারিখ-০৭/০৮/২৩ ইং দায়ের করে। আসামীদের হামলা ও মারপিটের বিরুদ্ধে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। ফলে যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। অবৈধ দখলমুক্ত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মামলার বাদী ও তাদের স্বজনরা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই অশ্বিনী কুমার বর্ম্মন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আসামি ফাজু মোহাম্মদ ও জাকিরুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়। তারাসহ সকল আসামি জামিনে রয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।