খুলনার পাইকগাছায় ভারী বর্ষণ ও শিবসা নদীর তীব্র ¯্রােতে আলমতলা ও খুদখালী এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়াপদার বেড়ি বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। গত বুধবার এ ফাটল সৃষ্টি হয়। এতে যেকোনো মূহুর্তে বাঁধ ভেঙে বাড়ি-ঘরসহ, চিংড়ি ঘের, প্রতিষ্ঠান ও জানমালের ক্ষতির শঙ্কায় পাঁচ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন ঠেকাতে চলতি বছর জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ৫২ কোটি টাকা অর্থায়ণে টেন্ডার হয়ে অর্থ বরাদ্দ হলেও কাজের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। উপজেলার লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জান তুহিন বলেন, শিবসা নদীর কড়-লিয়া ও গড়-ইখালীর খুদখালী স্থানে ভাঙন কবলিত এলাকা গত ২ দিনের ভারী বৃষ্টিতে ফাটল ধরেছে। যেকোনো মূহুর্তে ভেঙে যেতে পারে বেড়িবাঁধ। দুই ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন। এতে ক্ষতি হবে ঘরবাড়ি, চিংড়ি ঘের, মসজিদ-মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এদিকে বুধবার বিকেল ৫টায় উপজেলার লস্করের আলমতলা ও গড়ইখালীর খুদখালী ভাঙন কবলিত এ বাঁধ পরিদর্শন করেছেন খুলনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. আশরাফুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আল আমিন। পাইকগাছা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু আহম্মেদ হাওলাদার বলেন, পাউবোর ১০/১২ পোল্ডারে শিবসা নদীর ভাঙনে গড়ইখালীর খুদখালীর ৮০০মিটার ও লস্কর ইউনিয়নের আলমতলায় ৭০০মিটার বেড়ি বাঁধ দীর্ঘদিনের ভাঙন কবলিত। এর মধ্যে খুদখালির ১০০ মিটার এবং আলমতলার ২০০ মিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইতোমধ্যে লঘুচাপ ও চলিত পূর্ণিমার অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার হরিঢালীর মাহমুদকাটি, গদাইপুর ও রাড়-লীর জেলে পল্লি কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু বলেন, এ বছর জানুয়ারিতে জাইকার ৫২ কোটি টাকা অর্থায়ণে খুদখালি ও আলমতলার নদী ভাঙন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের টেন্ডার হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত এ প্রকল্পের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর-রাদ করপোরেশনের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার আরাফাত জাহান বলেন, এ মূহুর্তে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন কবলিত খুদখালী ও আলমতলায় মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করা হচ্ছে। টেন্ডারের পরে ভাঙন কবলিত দুই স্থানে পানির গভীরতা তিন গুন বেড়েছে। কাজেই পাউবোর নতুন নকশা হাতে পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। খুলনা পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. আশরাফুল আলম সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পোল্ডার রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে নকশা অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশনা দেন। না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এই প্রকৌশলী আরও বলেন, এ সময়ের মধ্যে কোনো ক্ষয়ক্ষতি ঘটলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব নিতে হবে।