জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার জিয়াপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে মনোনয়নপত্র উত্তোলনকারী প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোড়পূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর এবং স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়ন প্রত্যাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার জিয়াপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নিয়মিত কমিটি মেয়াদ আগমী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। বিধি মোতাবেক নিয়মিত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচনে তফশিল ঘোষনা করেন (দায়িত্বপ্রাপ্ত পিজাইডিং অফিসার) উপজেলা রির্সোস সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর সাকিল আহম্মেদ। মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন ২০জন অভিভাবক প্রার্থী। বাছায় পর্বে ১জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করে ২০ সেপ্টেম্বর ১৯ জনকে বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেন।
অভিযোগে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বরে কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় ওই দিন বিকেল ৪টার পরে পিজাইডিং অফিসার সাকিল আহম্মেদ এর নির্দেশে প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম সকল প্রার্থীদেরকে স্কুলে হাজির হতে বলেন। দুইজন প্রার্থী বাদে সকলেই হাজির হয়। এই সুযোগে ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী রুহুল আমিন এর নেতৃত্বে কিছু বহিরাগত ব্যক্তি হঠাৎ স্কুলের হল রুমে প্রবেশ করে। রেজুলেশন করতে হবে বলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই স্বাক্ষর করতে না চাইলে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তীতে ওই স্বাক্ষরে তাদের মনোনীত পাঁচজন প্রার্থী রেখে উপস্থিত এবং অনুপস্থিত সকল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার দেখান ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান। এরমধ্যে নজরুল ইসলাম ও রাম প্রসাদ ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও তাদের স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার দেখানো হয়েছে।
এবিষয়ে প্রার্থী শামীম ও আকবর হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক সবাইকে নিয়ে আলোচনার করবে বলে আমাদেরকে স্কুলে ডেকে নেয়। সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর কিছু লোকজন রুমের ভিতর প্রবেশ করে ঘরের দরজা বন্ধকরে দেয় এবং তারা বলে রেজুলেশনের করতে হবে সকলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দেন। যারা স্বাক্ষর করবে না তাদের রক্তারক্তি করা হবে।
নজরুল ইসলাম ও রামপ্রসাদ বলেন, আমরা ওই দিন স্কুলে যাইনি এবং কোন কাগজে স্বাক্ষর করিনি। আমাদের স্বাক্ষর জাল করে কে বা কারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছে আমরা জানি না।
অফিস সহকারী রুহুল আমিন বলেন, বাহিরের আজ যারা অভিযোগ করছেন, ভয়ভীতি দেখে স্বাক্ষর নিয়েছি এতদিন তারা কোথায় ছিল। এতদিন পর কেন এ অভিযোগ উঠছে।
প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, স্কুলের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাহিরে কি হয়েছে না হয়েছে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আমার কাছে বৈধভাবে যে কাগজপত্র এসেছে সে মোতাবেক নির্বাচন করার চেষ্টা করছি।
পিজাইডিং অফিসার সাকিল আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি তবে প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে যে কাগজপত্র পেয়েছি সেই মোতাবেক আমি নির্বাচন করার চেষ্টা করছি। এর বাহিরে কিছু ঘটলে তার দায়-দায়িত্ব আমার নয়।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছফিউল্লা সরকার বলেন, কোন মহলের পছন্দের প্রার্থী সেলেকশন না হওয়ায় তারা বিভিন্ন পায়তারা করছে। আমরা আমাদের প্রসেস মতো কাজ করছি।