বিজ্ঞানের অবিশ্বাস্য উন্নতির ফলে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিতে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনেছে অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার ফলে মুঠোফোন আরও আধুনিক ও স্মার্ট চেহারা নিয়ে আমাদের মধ্যে স্মার্টফোন নামে আবির্ভূত হয়েছে। মুঠোয় নিয়ে চলার জন্য হাতে উঠেছে স্মার্ট চেহারার মুঠোফোন। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বব্যাপী নতুন প্রজন্মের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বিপুল সম্ভাবনার পাশাপাশি ভয়াবহ চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোবাইলের ব্যবহারকারী প্রায় ৮ কোটি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ কোটির উপরে। যার মধ্যে তরুণ প্রজন্মই বেশি। ধারনা করা হচ্ছে নেটের গতি অনেক বেড়ে যাওয়ার এবং ব্যয় অনেক কমে যাওয়ার কারণে আগামী ২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ইন্টারনেটের ব্যবহারকারী ৫ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যে জিনিসগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে, সেটি পুঁজিবাদী সমাজের একটি অংশ। মূলত মুনাফার জন্য এ নতুন সংস্কৃতিগুলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। যা তরুণ প্রজন্মের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। স্মার্টফোন নিঃসন্দেহে অতি প্রয়োজনীয় একটি বস্তু; কিন্তু এর ভুল ব্যবহার অথবা অতিরিক্ত ব্যবহার ডেকে আনতে পারে মানবজাতির জন্য বড় বিপদ। এই একবিংশ-শতাব্দীতে কোলের শিশু বাচ্চাটি থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মানুষটি পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। স্মার্টফোনে অত্যধিক নির্ভরশীলতা মানুষকে টেনে নিচ্ছে আসক্তির দিকে।খাওয়া- দাওয়া বাদ দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে জরুরি কাজ শিকেয় তুলে স্মার্টফোনের পর্দায় তাকিয়ে থাকছেন। গড়ে প্রতিদিন ৫ ঘণ্টার বেশি সময় স্মার্টফোনে ব্যয় করেন এমন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাঁচ্ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু-কিশোররা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ধাবিত হয় অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রভাবিত হয়ে। ডিজিটাল প্রযুক্তির বিভিন্ন মাধ্যমকে (কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ফেসবুক, বিভিন্ন অ্যাপলিকেশন সফটওয়্যার, বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও অ্যাপস, ইত্যাদি) দ্রুত যোগাযোগের অন্যতম বাহন হিসেবে গণ্য করা হয়। দেশে অব্যাহতভাবে চলছে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার। আজকাল অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার চেয়ে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত বেশি সময় প্রদান করে যে, ইন্টারনেট ব্যবহার তাদের নেশায় পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের অপব্যবহার বৃদ্ধির কারণে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির আশঙ্কাও রয়েছে। কাজেই মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। সেই সাথে পারিবারিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও অত্যন্ত জরুরী। তহলেই এই কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব তরুণ সামজের আর রোধ করা সম্ভব সামজিক অবক্ষয়। বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য এখনই সবার মাঝে সচেতন হওয়া অতি জরুরী ও সেই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহীনিকে আরও সোচ্চার হতে হবে।