শীতকালীন সবজি চাষাবাদের জন্য বিখ্যাত খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা। শীত মৌসুমে জেলায় উৎপাদিত শাক-সবজির বিশাল একটি অংশ চাষাবাদ হয় এ অঞ্চলে। বাণিজ্যিকভাবে উন্নতজাতের শীতকালীন সবজির আবাদ করেন এখানকার চাষিরা। বেশি লাভের আশায় মৌসুমের আগেই আগাম সবজির চাষাবাদ করেন অনেকে। এ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে এবার শাক-সবজি চাষের ধুম পড়েছে। আগাম শীতকালীন সবজির ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ফসলের মাঠগুলোতে এখন নানা সবজির সমারোহ। শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মূলা,লাল ও সবুজ শাক, কলমি শাক, ডাটা শাক, লাউসহ হরেক রকম শীতকালীন সবজিতে হেসে উঠেছে ফসলের মাঠ। বিভিন্ন জাতের আগাম শীতকালীন শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষকরা। ইতোমধ্যে শীতের আগাম সবজি মূলা, কপি, বরবটি লাল ও সবুজ শাক, কলমি শাক, মূলা, পালং শাকসহ আরও কিছু শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। বাজারে চাহিদা থাকায় ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। দিঘলিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এবার ৩১০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৭৫ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষকরা বিভিন্ন সবজি আহরণের পাশাপাশি ক্ষেতে নিড়ানি দিচ্ছেন। অনেকে সবজি ক্ষেতে বালাইনাশক ও কীটনাশক স্প্রে করছেন। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে লাল-সবুজ বেগুন, মূলা, কপি, ঢ্যাঁড়সসহ বিভিন্ন সবজি। দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কিশোর আহমেদ বলেন, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের কৃষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে মাঠে আমন ধান ও সরিষার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আগাম শীতকালীন শাক-সবজি যেমন- লাল ও সবুজ শাক, মূলা, ঢ্যাঁড়স, পুইশাক, পালংশাক, কপি, শিম, বেগুন, ধুনা শাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন। আগাম সবজি চাষে বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের উৎসাহ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সরকারিভাবে প্রদর্শনী হিসেবে কৃষকের মাঝে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন সবজির বীজ ও সার বিতরণ করা হচ্ছে। এসব বীজে সবজি চাষ করে কৃষকরা তাদের পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে লাভবান হতে শুরু করেছেন। আশরাফ শেখ ২ বিঘা, এনামুল শেখ ২ বিঘা ও উজ্জ্বল শেখ ১ একর জমিতে মূলা, লাল ও সবুজ শাকসহ অন্যান্য সবজি লাগিয়েছেন। ইতোমধ্যে তারা বাজারে মূলা বিক্রি শুরু করেছেন। প্রথম দিকে তারা প্রতি মণ মূলা এক হাজার থেকে ১২শ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এখন বিক্রি করছেন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাজারে এখন প্রায় সব সবজির দামই বেশি। তাই ভালো দাম পেয়ে তারা বেশ খুশি। দেয়াড়া গ্রামের কৃষক মুন্না শেখ জানান, তিনি ৫০ শতাংশ জায়গায় সবজি এবং ৩৩ শতক জমিতে স্কোয়াস নামক নতুন সবজির আবাদ করেছেন। প্রাকৃতিক কোনো প্রকার দুর্যোগ না হলে প্রচুর টাকা ঘরে আসবে।