দেশ তথ্য-প্রযুক্তিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা পাঁচ্ছে। এত বিপুল সুবিধার পাশাপাশি কিছু সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। ক্রমেই সাইবার ক্রাইম বা তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ বেড়ে চলেছে। সাধারণ মানুষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। অনলাইন প্ল্যাটফরমে চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাসে প্রতারণা, ঋণ দেওয়া, প্রতারণামূলক অ্যাপ ব্যবহারের মতো নতুন সাইবার অপরাধ বেড়েছে। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইটের পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও (এআই) আশ্রয় নিচ্ছেন তাঁরা। ‘ঘরে বসে মাত্র দুই ঘণ্টা কাজ করে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করতে চান?’ অনলাইনে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত থাকা নারীদের ফাঁদে ফেলতে এমনই লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়। আপাতদৃষ্টিতে লোভনীয় এমন চাকরির প্রস্তাবে প্রায়শই নারীরা আগ্রহী হন, যারা ঘরে বসেই আয় করা সম্ভব এমন কাজ খুঁজছেন। এভাবে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার কোটি টাকা।
সাইবার অপরাধীা এমনভাবে সব প্ল্যাটফর্মে নিজেদের উপস্থাপন করে যে ভুয়া হিসেবে তাঁদের সহজেই শনাক্ত করা যায় না। প্রকৃত চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের মতোই সব তথ্য দিয়ে তাঁরা নিজেদের প্রোফাইল তৈরি করে রাখেন এবং প্রলোভন দেখানোর জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন। যদিও এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও এমন অনেক ঘটনা গনমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে প্রতারণার নানা কৌশলে বিভ্রান্ত সাধারণ মানুষ। তথ্য-প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, এর অপব্যবহার কিংবা প্রযুক্তিকেন্দ্রিক অপরাধ ততই বাড়ছে। তাই তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা সম্প্রসারণের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ দমনে আমাদের আরো বেশি সক্রিয় হতে হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী সাইবার স্কোয়াড গড়ে তুলতে হবে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর নানা পর্যায়ের নজরদারির কারণে এরইমধ্যে ছোট-বড় অনেক প্রতারককে আটক করা হয়েছে, কিন্তু তার পরও প্রতারণা থেমে নেই। কাজেই মানুষকেও সচেতন হতে হবে। সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ আরো বাড়াতে হবে ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কেউ যাতে অনলাইন প্রতারণার শিকার না হয়, এমন প্রত্যাশা রাখছি সরকারের কাছে।