দিঘলিয়া উপজেলায় হত দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে কর্মরত শ্রমিকদের হাতে পড়ে রয়েছে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ইজিপিপি বিলের অতিরিক্ত অর্থ উত্তোলনের ৬৬ লাখ ৬০ হাজার ১০৭ টাকা। দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে হত দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের অধিনে কাজ করে। তাদের পাওনা বিল নগদের মাধ্যমে গত ঈদ-উল- আযহার ২/৩ দিন আগে বিল পরিশোধ করা হয়। নগদ ব্যাংকিং সার্ভিস ভুলক্রমে শ্রমিকদের পাওনার অনুকূলে ১০ গুনের চেয়ে বেশী টাকা প্রেরণ করে। প্রত্যেক শ্রমিককে বেশী টাকা প্রেরণ ও উত্তোলনের ব্যাপারে তৎক্ষনিক সতর্ক করলেও শ্রমিকেরা তাদের টাকা তুলে ফেলে। পরবর্তীতে সরকারিভাবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে টাকা রিফান্ড করার তাগিদ করলেও কর্মরত শ্রমিকরা তাদের গৃহীত সরকারি অতিরিক্ত টাকা সরকারি খাতে রিফান্ড করে নি। দিঘলিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে হত-দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় নিয়জিত শ্রমিকেরা ১ কোটি ৮১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৯২ টাকা অতিরিক্ত উত্তোলন করে। উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের যৌথ প্রচেষ্টায় ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩৫ টাকা শ্রমিকেরা রিফান্ড করেছে। যে টাকার ১ কোটি চৌদ্দ লাখ ৫০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। স্থানীয় ব্যাংকে জমা রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৮৭৯ টাকা। ৬ টি ইউনিয়নে শ্রমিকদের নিকট এখনও পড়ে আছে ১ কোটি একাশি লাখ তিরানব্বই হাজার ৫৯২ টাকা। অতিরিক্ত উত্তোলনকৃত টাকার শতকরা ৬৪ ভাগ অর্থ রিফান্ড হয়েছে। শ্রমিকদের নিকট সরকারি অর্থ পড়ে রয়েছে শতকরা ৩৬ ভাগ।
দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নে আদায় হয়েছে ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ২৮২ টাকা এবং শ্রমিকদের নিকট অনাদায়ী রয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ২২০ টাকা। এ ইউনিয়নে আদায়ের শতকরা হার ৭৪℅।
বারাকপুর ইউনিয়নে আদায় হয়েছে ২২ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৭ টাকা। শ্রমিকদের নিকট অনাদায় রয়েছে ১৭ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৪ টাকা। এ ইউনিয়নে আদায়ের শতকরা হার ৫৬℅।
দিঘলিয়া ইউনিয়নে আদায় হয়েছে ৪২ লাখ ৫২ হাজার ৩৯৩ টাকা এবং শ্রমিকদের নিকট অনাদায় রয়েছে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৮৪১ টাকা। এ ইউনিয়নে সর্বোচ্চ আদায়ের শতকরা হার ৮৬℅।
সেনহাটি ইউনিয়নে আদায় হয়েছে ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৫ টাকা এবং শ্রমিকদের নিকট অনাদায় রয়েছে ৩১ লাখ ৮৭ হাজার ৯৩১ টাকা। এ ইউনিয়নে সর্বনিম্ন আদায়ের শতকরা হার ৩৮%।
আড়ংঘাটা ইউনিয়নে আদায় হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৪৭ টাকা এবং শ্রমিকদের নিকট অনাদায় রয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৭ টাকা। এ ইউনিয়নে আদায়ের শতকরা হার ৫৯%।
যোগীপোল ইউনিয়নে আদায় হয়েছে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৬৭১ টাকা এবং শ্রমিকদের নিকট অনাদায় রয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৭০৪ টাকা। এ ইউনিয়নে আদায়ের শতকরা হার ৭৯%।
দিঘলিয়া উপজেলায় হতদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে কর্মরত শ্রমিকদের নিকট সরকারি এ অনাদায়ী অর্থের ব্যাপারে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ এর সাথে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সরকারি অর্থ অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। তাদের মোবাইলের নগদ একাউন্টে শ্রমিকদের প্রাপ্তির চেয়ে বেশী টাকা ভুলক্রমে পাঠানো হয়েছে। সরকারি এ অর্থ রিফান্ডের ব্যাপারে আমরা স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মাধ্যমে জানানো ও তাদের অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন থেকে বিরত রাখার জন্য বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও তাদের নিবৃত রাখা যায় নি। পরবর্তীতে তাদের অতিরিক্ত গৃহীত টাকা সরকারি কোষাগারে রিফান্ড করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বার বার সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের তাগিদ দেওয়ার পরও বেশিরভাগ শ্রমিক টাকা রিফান্ড করেনি। সরকারি টাকা যে কেউ ফেরত দিতে বাধ্য। যারা সরকারি টাকা এখনও রিফান্ড করেনি কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।