৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশকিছু সমমনা দল এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলন করছে। এজন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে তারা দু’ একদিন বাদ দিয়ে লাগাতার অবরোধ ও হরতাল পালন করছে। এদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট সঙ্গীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছে। বিগত দু’ টি জাতীয় নির্বাচনেও তারা ১৪ দলীয় জোটের ব্যানারে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করেছে। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। তাই এবার আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনের অংশ নিয়েছেন। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পাবার পরও জোট সঙ্গীদের সাথে আসন ভাগাভাগির কারণে প্রায় ৩২ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে বাদ পড়ছেন। জাতীয় পার্টিকে ২৬ টি এবং ১৪ দলের শরিকদের ছ’ টি আসন ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই ৩২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকছে না। দলীয় প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে। আওয়ামী লীগ গত ২৬ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮ টি তে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। দু’ টি আসনে প্রার্থী না দিয়ে ফাঁকা রাখা হয়েছিল, যার একটি পেয়েছে জাতীয় পার্টি ও অন্যটি জাসদ। নির্বাচন কমিশনের যাচাই বাছাই শেষে আওয়ামী লীগের ওই প্রার্থীদের মনোনয়ন বৈধ হলেও শেষ পর্যন্ত ১৪ দলের শরিক ও জাতীয় পার্টির সাথে আসন ভাগাভাগিতে তারা নির্বাচনের অংশ নিতে পারছেন না। অন্যদিকে কিংবা পার্টি হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ( বিএনএম) ও তৃনমূল বিএনপি শুধু আশ্বাস পেয়েছে। কিন্তু কোনো আসন সমঝোতা হয় নি। তাদের ভোট যুদ্ধে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে হবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে দলীয় মনোনীত প্রার্থীরা হেরে যেতে পারেন বলে অনেক আসনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জোট প্রার্থীরা তাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবার দাবি জানালেও আওয়ামী লীগ তা না করে দিয়েছে। স্বতন্ত্র অনেক প্রার্থীদের কাছে দলীয় হেভিওয়েন্ট নেতা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীই নিজেদের বিজয়ের ব্যাপারে সন্ধিহান। শুধু মাত্র ভোটের মাঠে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতির চিন্তা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঠে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মাঠে মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও মারামারি ঘটনাও ঘটেছে। এ পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছেন। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত পরিস্থিতি কি হয়, বলা যায় না। এ ছাড়া বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নির্বাচন বয়কটের আন্দোলন জ্বালাও, পোড়াও, রেল লাইনের পাত উপড়ে ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। আমরা রাজনীতির নামে ধ্বংসাত্মক কোনো কার্যক্রম সমর্থন করি না। আন্দোলনের নতুন পথ তাদের সৃষ্টি করতে হবে জনকল্যাণে। সাথে নির্বাচন অংশ নেয়া প্রার্থীরা তাদের প্রচরণা চালাবেন শান্তি পূর্ণ উপায়ে। কোনো অবস্থাতেই ভোটারদের মাঝে ভয় সৃষ্টি হয়,এমন কিছু করা উঠিত নয়।