দেশে অগ্নিকান্ডের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে, রাজধানী ঢাকাতে একের পর এক বস্তি ও বিভিন্ন কারখানাগুলোতে প্রায়ই নানা ভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের। এরই মধ্যে, গত ১৩ জানুয়ারি রাত সোয়া ২টার দিকে তেজগাঁও এফডিসি গেটের পাশে মোল্লাবাড়ি নামক বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। রাত ২টা ২৩ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে। একপর্যায়ে রাত ৩ টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। তবে কোন জায়গা থেকে এটা হয়েছে তার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এ দূর্ঘটনায় দুজন নিহত হন। একজন নারী ও একজন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও মা-ছেলেসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আহতদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নিহতদের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। তাদের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, তীব্র শীতে গভীর রাতে বস্তির বাসিন্দাসহ আশপাশের মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল। হঠাৎ আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে বস্তির বাসিন্দারা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আগুন তীব্র আকার ধারণ করে ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দারা দৌড়ে নিজেরা বাঁচার চেষ্টা করলেও ঘর থেকে একটি জিনিসপত্রও বের করতে পারেনি। কোথা থেকে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে সে ব্যাপারে কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। এর আগে রাজধানীর মহাখালী সাততলা বস্তি ও কল্যাণপুরের নতুন বাজার বস্তিতে আগুন লেগেছে। চট্টগ্রামে মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে তিনটি অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে ছয়টি বস্তি। দুই বছর আগে ভেড়ামারা বস্তিতে এমনই এক অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছিল ৯টি তাজা প্রাণ। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেওয়া সমীচীন, প্রতিটি অগ্নিকান্ডের পরই অভিযোগ উঠছে এসব বস্তিতে আগুন দেওয়ার বিষয়টি। তবে ফায়ার সার্ভিস কিংবা পুলিশ কারো কাছেই এর সঠিক জবাব নেই। এসব ঘটনা তদন্তে প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তরিকতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন- এমন বিষয় পত্রিকায় এসেছে। আমরা বলতে চাই, বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষে নিতে হবে।