নতুন সরকার গঠনের পর অভিনন্দন জানানোটা স্বাভাবিক একটি রীতি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অভিনন্দন তো অস্বাভাবিক কিছু না বা নতুন করে চালু করার কোনো বিষয় না। আমি নির্বাচিত হয়েছি, আমার স্বজন-বন্ধুরা অভিনন্দন জানাবেন, এটা তো স্বাভাবিক। তবে আমরা কারও অভিনন্দনের জন্য, চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় বসে আছি; নির্বাচিত একটা সরকার এমন দেউলিয়া অবস্থায় পড়েছে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।’ রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এ পর্যায়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর স্বীকৃতি কতটা জরুরি- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘স্বীকৃতি... এটা অভিনন্দন। এটা গণতন্ত্রের একটা রীতি-নীতিতে পরিণত হয়েছে। এটা এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ, বন্ধু রাষ্ট্ররা অভিনন্দন জানায়। ভারতে প্রধানমন্ত্রীর বেলায় যেমন, ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বেলায় যেমন, এমনই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে বন্ধু রাষ্ট্র এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুরক্ত অনেকে আছেন, তারা তাকে অভিনন্দন জানাবেন, এটাইতো স্বাভাবিক।’ বিএনপি হিংসার আগুনে জ্বলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন এখন হাসি-তামাশায় পরিণত হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। যদি কর্মসূচির নামে ২৮ অক্টোবরের মতো সন্ত্রাসী কর্মকা-, গাড়ি পোড়ানো, মানুষ পুড়িয়ে মারা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে; তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবো।’ বিএনপির ‘তথাকথিত আন্দোলনের’ সুনির্দিষ্ট রূপরেখা কেউ দেখেনি মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের আন্দোলনের বিষয়টি স্পষ্ট নয়, একবার তারা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আবার তারা নির্বাচন বানচালের আন্দোলন করে। আসলে তাদের তথাকথিত আন্দোলনের ডাক দিয়ে ব্যর্থ হয়ে, তারা রাজনৈতিক আন্দোলনকে হাসি তামাশায় পরিণত করেছে। তথাকথিত আন্দোলনের কর্মসূচিতে এখন ঘোড়াও হাসে।’ ‘তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আমরা বাধা দেবো না, আন্দোলনের নামে সংঘাত করতে চাইলে আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবো আর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা উদ্বোধ পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।’ বিএনপি হিংসায় জ্বলছে দাবি করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি হিংসায় জ্বলছে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পরেও বিপুল সংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দলকে নির্বাচিত করেছে, এই হিংসার আগুনে তারা জ্বলছে। তারা ঈর্ষাকাতর হয়ে আছে।’ এ সময় দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গেও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এবং সেই লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটা সেল কাজ করছে এবং কীভাবে পরিস্থিতির অবনতি, মূল্যস্ফীতির বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে এবং ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য এখন সারা বিশ্বেই একই অবস্থা, ইউরোপে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৫। যুদ্ধও বাড়ছে মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে, যুদ্ধও বাড়ছে জিনিসপত্রের দামও বাড়ছে। যুদ্ধের ক্ষেত্র দেখুন বাড়তেই আছে। মাঝে মধ্যে মনে হয় পৃথিবীটা একটা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, মনে হয় সারা দুনিয়াটা একটা যুদ্ধক্ষেত্র। এর প্রভাব দ্রব্যমূল্যে পড়বেই। এটা আমরা চাইলেই রুখতে পারবো না।’ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও উপণ্ডদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।