বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। বিশ্বের ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে তালিকায় গতবার বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম, যা এবার হয়েছে ১০তম। সূচক অনুসারে বিগত বছগুলোর তুলনায় এবছর বাংলাদেশে দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্বের ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের ২০২৩ সালের দুর্নীতির পরিস্থিতি বিবেচনায় দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) প্রকাশ করেছে বার্লিনভিত্তিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কার্যালয়ে বার্লিনের সঙ্গে একযোগে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
সিপিআই সূচকে দুর্নীতির ধারণার মাত্রায় ‘০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ‘১০০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বাধিক সুশাসিত বলে ধরা হয়। ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিতে এই সূচকে বাংলাদেশের স্কোর গেল বছর তুলনায় ১ পয়েন্ট কমেছে।
দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে (ভাল অবস্থান) ডেনমার্ক এবং সর্বনিম্ন পর্যায়ে (খারাপ অবস্থান) সোমালিয়া অবস্থান করছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে দুর্নীতির হার বেশি। সূচকে ১০০ স্কোরের মধ্যে ৯০ পেয়ে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে তালিকার শীর্ষে আছে ডেনমার্ক। ৮৭ পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ফিনল্যান্ড। আর সবচেয়ে দুর্নীতি বেশি হচ্ছে সোমালিয়ায়। তাদের স্কোর মাত্র ১১। ১৩ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া ও ভেনেজুয়েলা।
প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান হতাশাজনক। এবার বাংলাদেশের স্কোর ও অবস্থানের অবনমন প্রমাণ করে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবিক অর্থে কার্যকর প্রয়োগ হয়নি।’
হতাশা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ অতি দুর্নীতিতে আক্রান্ত। বাংলাদেশে আসলে কোনো গণতন্ত্র নেই। বাংলাদেশে যেটা আছে সেটা হাইব্রিড গণতন্ত্র।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম, সমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।