ফ্রিল্যান্সিংয়ের নামে ঘরে বসে মোটা অঙ্কের টাকা আয়ের লোভ দেখিয়ে কিছু সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। জানা গেছে, এসব চক্র ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিকমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আয়ের লোভনীয় অফার দেয়। এসব বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে যোগাযোগ করেন তরুণ-তরুণীরা। এরপর প্রতারক চক্র প্রথমে তাদের কাজের বিনিময়ে কিছু অর্থ পেমেন্টও করে। একপর্যায়ে বিশ্বস্ততা অর্জন করে তারা তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এর পাশাপাশি অনলাইন জুয়ার মতো অপরাধ তো আছেই। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, টোপে পড়ে সর্বস্ব হারালেও লোকলজ্জা এবং বাড়তি ঝামেলার ভয়ে তাদের অনেকেই আইনি প্রতিকার চাইতে যান না। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, প্রতারণার ক্ষত পোষাতে কেউ কেউ অন্যায় পথে পা বাড়াচ্ছেন। তাদের মধ্যে সাধারণ মানুষ তো আছেনই, প্রতারণার শিকার হয়ে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার একটি বৌদ্ধবিহারের প্রধান পুরোহিত ইয়াবা পাঁচারের মতো ঘৃণ্য অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, সাইবার অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ না করায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতারকের সংখ্যা। এটা সত্য, বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্রগতির ধারায় বাংলাদেশও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে, যার মূলমন্ত্র প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন। তবে প্রযুক্তির এই জ্ঞান ব্যবহার করে ওঁৎ পেতে থাকা অনলাইনভিত্তিক নানা অপরাধ চক্র প্রতারণার ফাঁদ বুনছে। এ ধরনের প্রতারকদের খপ্পর থেকে বাঁচতে তরুণসমাজকে সচেতনতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে আইনি সহায়তার পথ আরও সুগম করতে হবে। প্রতারিতরা অভিযোগ জানাতে এসে যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশে সাইবার নিরাপত্তার জন্য কাজ করা সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সময় থাকতে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া সাইবার অপরাধ বা অনলাইনে প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে জনসচেতনতাও জরুরি। প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ উত্তম। কিন্তু নানা সময়ে এমন ঘটনা সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হলেও কিছু মানুষ বারবার একই পথে হাঁটেন। তাই মানুষকে সচেতন করতে হবে যাতে তারা এই ধরনের ফাঁদে পা না দেয়।