বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো পিঠা উৎসব। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি শ্রীমঙ্গলের পল হ্যারিস রোটারী উচ্চ বিদ্যালয়ে এই পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্কুলের বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপস্থিত ছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক বিশেষ করে মায়েদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আবহমান বাংলার এক চিরায়ত সংস্কৃতি পিঠা-পুলির উৎসব। বাংলার ঐতিহ্যবাহী শীতকালীন এই উৎসবের ধারাকে অব্যাহত রাখতে মঙ্গলবার স্কুল কর্তৃপক্ষ আয়োজন করে পিঠা উৎসব। পিঠা উৎসবে নানান রকম পিঠার সমাহারে সজ্জিত ছিল স্টলগুলো। ওই উৎসবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পিঠা উৎসবে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের ঢল নেমেছিল এ উৎসবে। বিভিন্ন স্টলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। স্টলগুলোতে পিঠা বিক্রির ধুম ছিল লক্ষ্যনীয়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, আমন্ত্রিত অতিথিদের পদভারে উৎসব স্থল ছিল উৎসবের আমেজে মুখরিত। আর অনুষ্ঠানকে ঘিরে ছিল সেলফি তোলার ধুম। বেলুন, ফ্যাস্টুন দিয়ে সাজানো স্কুল প্রাঙ্গন ছিল উৎসবের আমেজ। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম শীতকালেই বেশি পড়ে। কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর বা সন্ধ্যায় গাঁয়ের বধূরা চুলার পাশে বসে ব্যস্ত সময় কাটায় পিঠা তৈরিতে। অতিথি বিশেষ করে জামাই ও আত্মীয়-স্বজনদের এ সময় দাওয়াত করে পিঠা খাওয়ানো হয়। এ সময় খেজুরের রস থেকে গুড়, পায়েস এবং নানারকম মিষ্টান্ন তৈরি হয়। বাঙালির লোকজ ইতিহাস-ঐতিহ্যে পিঠা-পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। পিঠা-পায়েস সাধারণত শীতকালের খাবার হিসাবে অত্যন্ত পরিচিত এবং মুখরোচক খাদ্য হিসাবে বাঙালি সমাজে আদৃত। আত্মীয়স্বজন ও পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় ও মজবুত করে তুলতে পিঠা-পুলির উৎসব বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম শীতকালেই বেশি পড়ে। সবচেয়ে জনপ্রিয় পিঠা হচ্ছে ভাপা পিঠা। এছাড়াও আছে চিতই পিঠা, দুধচিতই, পাটিসাপটা, নকশি পিঠা, মালাই পিঠা, পাকন পিঠা, ঝাল পিঠা ইত্যাদি। বাংলাদেশে প্রায় শতাধিক ধরনের পিঠার প্রচলন রয়েছে। শীতকালে শুধু গ্রামবাংলায়ই নয়, শহর এলাকায়ও পিঠা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। ইদানীং শহরেও পাওয়া যায় শীতের পিঠার স্বাদ। পিঠা-পুলি আমাদের লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই প্রকাশ। আমাদের গ্রামবাংলায় এসব পিঠা-পার্বণের আনন্দ-উদ্দীপনা এখনো মুছে যায়নি। পিঠা-পার্বণের এ আনন্দ ও ঐতিহ্য যুগ যুগ টিকে থাকবে বাংলার ঘরে ঘরে। আজ সকাল ১০ টায় পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন স্কুলের অধ্যক্ষ দিল আফরোজ বেগম। আরো উপস্থিত ছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা ফাহিমা খান জনি, মাহমুদা আকতার, পদ্মা রানী চৌধুরী, মন্টি ঘোষ, ফাতেমা আক্তার, অঞ্জন দেব, স্বপ্না রায়, সামিয়অ আক্তার, সাদিক আহমেদ ইমন, চম্পা বেগম, নাফিসা তাবাসসুম ফারিহা ও প্রমা রানী দেব।