খুলনার ডুমুরিয়ায় উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের কুড়েঘাটা এলাকার বিলের ৩টি খালের গোড়া প্রভাবশালী মৎস্য চাষীরা বেঁধে দেওয়ায় ২টি ইউনিয়নের প্রায় ৩’শ একর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পানি সরবরাহের কোন ব্যবস্থা না থাকায় শ’ শ’ বোরো চাষী হতাশ হয়ে পড়েছে। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভূক্তভোগী শতাধিক কৃষক ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ এবং এলাকার কৃষক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাগুরাঘোনার কুড়েঘাটা বিলের পানি সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত আন্দুরখালটির গোড়া বেঁধে মাছ চাষ করছে মাগুরাঘোনা গ্রামের সোহাগ শেখ, বাবু শেখ, ইমদাদুল শেখ, ওলিয়ার শেখ, আব্দুল শাহিন, আলিমুল শেখ ও রায়হান উদ্দীন। শীতলাখালীর খালটির গোড়া বেঁধে নিয়েছে রেজাউল সরদার ও আড়োখালটির গোড়া একইভাবে বেঁধে দেয়া হয়েছে। এতে ধান রোপনের সময় সমস্যা না হলেও বর্তমানে অত্র এলাকার মৎস্য চাষিরা ঘেরের পানি নিষ্কাশনের জন্য সেচ ম্যাশিন লাগিয়ে উক্ত পানি খালে ফেলছে। এতে ধানের জমি থেকে খালের পানির স্তর ৪/৫ হাত উচু হয়ে গেছে। আর খাল গুলো গোড়ায় আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেয়ায় উক্ত পানি সরতে না পেরে ধান ক্ষেতে প্রবেশ করছে। ফলে আটলিয়া ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের প্রায় ৩ একর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে ধান গাছ গুলো পানির নিচে থাকায় তা লালচে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং ধান গাছের গোড়ার শিকড় গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত বাঁধ কেটে পানি সরানো না হলে ধান গাছ গুলো মরে নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া কুলবাড়িয়া স্লুইস গেট বন্ধ থাকায় সমস্ত এলাকার পানি সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে আবেদনের পর ৭দিন অতিবাহিত হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় শ’ শ’ কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে কৃষক রঞ্জন কুমার সরদার, অমল সরদার, দিলীপ সানা বলেন, এখানে অনেক ঘের ব্যবসায়ী আছেন যারা ধান চাষ করেনি। তারা এখন ঘেরের পানি কমানোর জন্য ম্যাশিন দিয়ে পানি সেচে খালে দিচ্ছে। এতে খালের পানি ৪/৫ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু পানি সরানো খালের মুখ বন্ধ থাকায় এই পানি ধান ক্ষেতে প্রবেশ করে ধান তলিয়ে যাচ্ছে। অনেকে ম্যাশিন লাগিয়ে পানি সেচে ধান গাছ বাঁচানোর চেষ্টা করলেও কিছুক্ষণ পর আবার তা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। তাই যতক্ষণ কুলবাড়িয়া গেটসহ খাল ৩টির বাঁধ কেটে দেওয়া না হবে, ততক্ষণ খাল থেকে পানি কমানো সম্ভব না। তাই উদ্ধোর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, যতদ্রুত সম্ভব খাল গুলোর বাঁধ কেটে দিয়ে পানি সরানোর ব্যবস্থা করলে ধান গাছ গুলো বাঁচানো সম্ভব হবে। ধান গাছ মারা গেলে পরিবার পরিজন নিয়ে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ নুরুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।