এনার্জি ড্রিংকস মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমাদের দেশে যুবক-যুবতীদের মাঝে এনার্জি ড্রিংকস বা শক্তিবর্ধক পানীয় বেশ জনপ্রিয়। অনেকের এ আসক্তিটা আবার নেশায় পরিণত হয়েছে। এগুলো পান করার মাধ্যমে মাদকাসক্তির প্রতি ধাবিত হচ্ছেন তরুণরা। এনার্জি ড্রিংকসের প্রতি ২৫০ মিলিলিটার ক্যানে আছে ৮০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন, কোনো কোনো ড্রিংকে তা আছে ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। জনপ্রিয় ক্যাফেইনসমৃদ্ধ এনার্জি ড্রিংকস বা শক্তিবর্ধক পানীয়র সঙ্গে হৃৎপিণ্ড, স্নায়ু এবং পাকস্থলীর সমস্যার যোগসূত্র রয়েছে। ক্যাফেইনসমৃদ্ধ এনার্জি ড্রিংকসগুলো জনপ্রিয় ঠিকই কিন্তু এসব পানীয়গুলো একজন মানুষের রক্তনালীকে ধীরে ধীরে অকার্যকর করে দেয়। এক গবেষণায় দেখা যায়, এসব পানীয়তে উচ্চ মাত্রার সুগার ও ক্যাফেইন থাকে যার মাত্রা প্রায়শই দেখা যায় কোমল পানীয়তে থাকা এ ধরনের উপাদানের চেয়ে বেশী। ফলে এ পানীয় বেশী মাত্রায় পান করলে শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরির ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ এ থেকে স্থূলতা, দাঁতের ক্ষয় রোগ, মাথাব্যথা ও ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত সুগারের কারণে স্থূলতা, দাঁতের সমস্যা ছাড়াও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি করে। ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই বিএসটিআই, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বেভারেজ উৎপাদনকারীদের এক সভায় এনার্জি ড্রিংকসের মান প্রণয়ন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ওই বছরের ১৭ অক্টোবর প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকাগুলোতে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১৪৫ পিপিএমের বেশি কার্বোনেটেড বেভারেজ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ ও বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরও থেমে নেই এর উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় এনার্জি কোল্ড ড্রিংকসগুলো বাজারে জনপ্রিয় পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণ হচ্ছে কোম্পানির আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনের পেছনে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করার মূল টার্গেটই হচ্ছে ক্রেতাদের আসক্ত করা। বিশাল অঙ্কের টাকা ব্যয় করার মধ্য দিয়ে তারা পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের মন আকৃষ্ট করতে সক্ষমও হয়েছে। আর এ কারণেই পানীয় শিল্পে একটি দ্রুত প্রসারমাণ আইটেমে রূপ নিয়েছে এসব পণ্য। তাই এখনি সময় এসব নিষিদ্ধ পানীয় সম্পূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করা। সরকার যেভাবে ফরমালিনের বিরুদ্ধে অভিযান, নিষিদ্ধকরণ দণ্ডবিধি আরোপ করেছে এনার্জি ড্রিংকসের আমদানি বিপণন নিষিদ্ধ করার কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়াও অতীব জরুরি। এ ব্যাপারে সরকার ও জনসাধারণ সবাইকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে।