দেশে প্রতি বছর বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বেকারত্ব যেনো অভিষাপে পরিণত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে শিক্ষিত বেকার সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ। করোনা মহামারীতে অনেকে চাকরি হারিয়েছে। অনেক কোম্পানি দেউলিয়া হওয়াই বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলছে, সাত দিনে কমপক্ষে এক ঘন্টাও কোনো কাজ করেননি, কিন্তু কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তাঁদেরকেই বেকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এছাড়াও ৩০ দিন বেতন বা মজুরির বিনিময়ে কাজ খুঁজেছেন, তাঁদের ও বেকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বিবিএসের পরিসংখ্যান অনুযায়ি, দেশে গত বছরের শেষ তিন মাসে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে ৪০ হাজার। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ২৩ লাখ। এর মধ্যে পুরুষ বেকারের সংখ্যা ১৫ লাখ ৭০ হাজার এবং নারী বেকারের সংখ্যা ৭ লাখ ৮০ হাজার। বিগত ২০২২ সালে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২৩ লাখ ১০ হাজার। বর্তমানে এক বছরের ব্যবধানে বেকারের সংখ্যা ৪০ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই বছর ধরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নানা সংকট চলছে। ডলার-সংকট, ব্যবসা-বাণিজ্যে খারাপ ও নতুন বিনিয়োগ না হওয়াকে বেকারত্ব বাড়ার কারণে হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। দুই বছর ধরে দেশ করোনা সংকটের মধ্যে ছিল, এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। ফলে দেশে বেসরকারি বিনিয়োগও কমেছে। ডলার সংকটের কারণে অর্থনীতির যে মূল চালিকা শক্তি গ্যাস-বিদ্যুত সরবরাহেও মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় বেকারত্ব বাড়তেই পারে। বাংলাদেশ আয়তনের দিক থেকে জনসংখ্যা অনেক বেশি। যেখানে আয়তনে বিশে^ বড় দেশ রাশিয়া কিন্তু ঘনত্বের দিক থেকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা রাশিয়ার চাইতেও বেশি। অধিক জনসংখ্যার কারণেও বেকারত্ব বেড়ে যায়। দেখা যায় অনেক শিক্ষিত তরুণরা চাকরি না পেয়ে নানান অপরাধ মূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে। অনেকে আত্নহত্যার পথ বেচে নেয়। বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে সরকারকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। যাতে শিক্ষিত বেকাররা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এর জন্য বেকার তরুণ ও তরুণীদের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। এছাড়াও দেশের তরুণ সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন সহজ ঋণের ব্যবস্থা। তাহলে আমরা বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারি।