কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা নাইফ আহমেদ তুষারকে (২৮) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর বাজারে প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১০টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত নাইফ আহমেদ তুষার মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদ ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক। তার পিতা মোকারিমপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড জাসদের সভাপতি রবিউল ইসলাম। স্থানীয়রা জানান, নাইফ আহমেদ তুষার গোলাপনগর বাজারে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় ১২ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল চায়ের দোকানে সামনে এসে দাঁড়ায়। প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জনের একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল থেকে নেমেই তুষারকে চায়ের দোকানের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। একপর্যায়ে তুষার দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে বাজারের রাস্তায় চমন ডাক্তারের বাড়ি সংলগ্ন প্রকাশ্যে তারা আবারও কুপাতে থাকে। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে আসলে রাস্তায় ফেলে রেখে দুর্বৃত্তরা ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এতে তুষারের পায়ে, হাতে, বুকে ও মাথাসহ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে রামদার বহু আঘাতে মারাত্মক যখম হয়। পরে স্থানীয়রা আহত তুষারকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নাইফ আহমেদ তুষার মারা যান। তার মৃত্যুর খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ বেনু বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে নাইফ আহমেদ তুষার গোলাপনগর বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় প্রায় ১৫ টি মোটরসাইকেলে ৪০ থেকে ৪৫ জনের একদল সন্ত্রাসী এসে তুষারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে চলে যায়। পূর্ব শুত্রুতার জের ধরে দৃবৃত্তরা তাকে কুপিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে বলে তিনি জানান। জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ¦ আব্দুল আলীম স্বপন বলেছেন, বেশ কয়েক বছর পূর্বে সেবুল নামের জাসদ ছাত্রলীগের এক নেতাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়ে ছিল। ওই মামলা এখনো বিচারাধীন। ওই মামলারই স্বাক্ষী ছিলেন নিহত তুষার। ওই মামলারই জের ধরে প্রতিপক্ষরা এই হত্যার মত জঘন্য অপরাধ সংগঠিত করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আসামিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। আজ শনিবার রাজশাহী মেডিকেলের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে আজকেই লাশ দাফন করা হবে। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু জানাযায় শরিক হওয়ার পর আমাদের পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।
এ দিকে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম জানিয়েছে, হামলার ঘটনা জানার পর থেকেই ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশের আভিযানিক দল তদন্ত সহ অভিযান অব্যবহত রেখেছে। এ পর্যন্ত ১ জন জিজ্ঞাসাবাদেও জন্য আটক করা হয়েছে।